ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ক্রাউড ফান্ডিং ফর ‘কাঁটা’ || টোকন ঠাকুর

টোকন ঠাকুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ২৪ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্রাউড ফান্ডিং ফর ‘কাঁটা’ || টোকন ঠাকুর

কাঁসার থালার মতো একটি চাঁদ- সেই চাঁদ উঁকি দিল কুয়োর জলে। ছোট্ট বউটি ঘর থেকে বেরিয়ে উঠোনের কুয়োর পাড় ঘেঁষে গিয়ে দাঁড়াল। কুয়ো থেকে ডাক দিল চাঁদ কিংবা কুয়োর জলে ভাসমান চাঁদকে ধরতে গেল স্বপ্নারানী দাস। বউকে উদ্ধার করতে গিয়ে স্বপ্নার স্বামী সুবোধচন্দ্র দাস লাফিয়ে পড়ল কুয়োর মধ্যে। পরদিন মহল্লার লোকেরা একজোড়া লাশ ওঠালো কুয়ো থেকে, পুলিশে সেই জোড়া লাশ নিয়ে গেল থানায়। এই হচ্ছে নির্মাণাধীন 'কাঁটা'  সিনেমার অংশ।

এরকম আরো দুইজোড়া লাশ ওঠানো হবে কুয়ো থেকে। তাদেরও নাম সুবোধচন্দ্র দাস ও স্বপ্নারানী দাস। বারবার সুবোধ ও তার বউ স্বপ্না মরে মরে যায় 'কাঁটা'য়। পিরিওডিক্যাল ছবি 'কাঁটা'র শ্যুটিং প্রায় ৭৫ ভাগ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে আমরা 'কাঁটা' টিমের মেম্বাররা সবাই আছি পুরোনো ঢাকার নারিন্দায়। এ ছবির ৯৫ ভাগ লোকেশন ষাটের দশকের পুরোনো ঢাকা, যে সময়ের শহর প্রায় নেই-ই। সেট অনেকটাই ঠিকঠাক করে নিতে হচ্ছে, কারণ, নতুন নতুন বিল্ডিংয়ে ভরে গেছে ঢাকা শহর। পুরোনো বাড়িঘরদোর এখনো কিছু টিকে আছে বটে, কিন্তু শুটিংয়ের জন্যে তা প্রায় উপযোগী নয়। ষাটের দশকের প্রপস-কস্টিউম জোগাড় করাও অনেকটা দুষ্প্রাপ্য যদিও আমরা সেটা করতে বাধ্য। ছবির পাত্রপাত্রী দু'শতাধিক। মূলত একটি মহল্লার মানুষের অসহায়ত্ব, আত্মগ্লানি ও বিভ্রান্তির গল্প 'কাঁটা'। এখন শুটিং চলছে। ৭৫ ভাগ শুটিং সম্পন্ন হয়েছে, শুটিং লোকেশনেই সম্পাদনার কাজ অব্যাহত রয়েছে।



'কাঁটা'র গল্প শহীদুল জহিরের, চিত্রনাট্য আমার, নির্মাতা আমি। কিন্তু ছবির প্রযোজক কে? বলতেই হবে- 'কাঁটা' প্রডিউসড্ বাই আওয়ার পিপল। সরকারের রাজস্ব থেকে 'কাঁটা' নির্মাণের প্রথম অর্থ সাপোর্ট পেয়েছি। যদিও  ঘোষিত সরকারি অনুদানের ৩৫ লাখ টাকার ১০ লাখ টাকা পেয়েছিলাম পাঁচ বছর আগে। এবং গতবছর অক্টোবর থেকে অক্টোবর ২০১৮ পর্যন্ত 'কাঁটা'র আনুষ্ঠানিক প্রি-প্রডাকশন ও প্রডাকশন ওয়ার্ক চলছে। ৭৫ ভাগ শুটিং ও সম্পাদনা এগিয়ে নিতে নভেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত খরচ হয়ে গেছে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা। সরকারি  কোষ থেকে প্রাপ্ত ১০ লাখ টাকার বিপরীতে আরও যে ৭৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেল, তা এসেছে দুয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী, অন লোকেশন লোন ও আমার পারিবারিক ব্যবস্থাপনায়। ছবির শুটিং আরও ২৫ ভাগ বাকি। এ মুর্হূতে প্রডাকশনের বাজেট শূন্যের কোঠায়। কিন্তু ‘কাঁটা’ টিম এবং আমি বদ্ধপরিকর ছবির শতভাগ শুটিং সম্পন্ন করার দায়বদ্ধতায়। এ পর্যায়ে কী করতে পারি?



উই-আওয়ারস্ সিনেমা প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে এলো ‘কাঁটা’র পাশে। ()।



মনে রাখা দরকার, সরকারি অনুদান মানেই ছবিটির ফান্ড যুগিয়েছে এদেশের মানুষ। কিন্তু এও মনে রাখা দরকার, সরকারি টাকা নির্মাণ বাজেটের এক চতুর্থাংশ মাত্র। বাকি অর্থ আমাকে জোগাড় করতেই হবে, কেউ না কেউ আমাকে ‘কাঁটা’ নির্মাণের বকেয়া অর্থ দানে এগিয়ে আসবেনই- এই বিশ্বাস আমি রাখি। ভালো একটি ছবি বানানোর দায়বদ্ধতা আমার এবং ‘কাঁটা’ টিমের রয়েছে। ভালো কিছু নির্মাণের জন্য যে পরিশ্রম, ত্যাগ করতে হয়, তা আমরা করে যাচ্ছি। এই বাস্তবতায় আপনারা উই-আওয়ারস্ সিনেমা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী নির্মাণাধীন ‘কাঁটা’র পাশে দাঁড়াবেন, ‘কাঁটা’ হয়ে উঠবে গণমানুষের ছবি- এ আমার চাওয়া। আমার যা চাওয়া, পাওয়া প্রয়োজন, কারও না কারও তা দেওয়া প্রয়োজন, এরকমটি ভাবি।

অতীত, বর্তমানের ভেতর দিয়ে ভবিষ্যতে প্রবিষ্ট হয়, ‘কাঁটা’ ছবিতে ভবিষ্যত বর্তমানে ভেতর দিয়ে অতীতে অনুপ্রবিষ্ট হবে- এটি নির্মাণেই আমি এবং আমার টিম একটি গেরিলা জীবনযাপন করে যাচ্ছি নারিন্দায়, পুরোনো ঢাকায়।

আলোকচিত্র: হোসাইন আতাহার 




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ নভেম্বর ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়