ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু

মো. জামাল মল্লিক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়েই দৃশ্যমান হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির ওপর এই স্প্যান বসানো হয়। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সেতু বিভাগ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
 


পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সেতু বিভাগ। তারা জানান, ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও তিন হাজার টনের বেশি ওজনের স্প্যানটি চার হাজার টন বহন ক্ষমতার একটি ক্রেনে তোলা হয় গত রোববার। এরপর মাওয়া প্রান্ত থেকে ওই ক্রেনটি চালিয়ে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছাতে সময় লাগে দুই দিন। পরের কয়েক দিন প্রস্তুতি শেষে আজ সকালে স্প্যানটি খুঁটিতে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

সেতু প্রকল্প সূত্রে আরো জানা যায়, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত পদ্মা সেতুর মোট ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুতে ৪২টি পিলার থাকবে। এর মধ্যে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হওয়ায় এ দুটি পিলারের ওপর স্প্যান বসানো হলো।
 


সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়ে নির্মিত হবে সেতু। বর্তমানে ১৬টি খুঁটি নির্মাণের কাজ চলমান আছে। এগুলোতে পর্যায়ক্রমে স্প্যান বসানো হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে আরও অন্তত একটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে সেতু বিভাগের।

পদ্মা সেতুর প্রতিটি খুঁটির নিচে ছয়টি করে পাইল বসানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে পাইলের সংখ্যা ২৪০টি। ইস্পাতের এসব পাইল মাটির নিচে ৯৬ থেকে ১২৮ মিটার পর্যন্ত গভীরে বসানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৬৮টি পাইলিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরও ১৭টি পাইল বসানোর কাজ চলমান আছে।

সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পদ্মা সেতু ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ জনসাধারণের জন্য খুলের দেওয়া হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের সবচেয়ে বড় এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে দ্বিতীয় আরডিপিপি অনুযায়ী এর নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
 


এর আগে ২০১৪ সালের ১৮ জুন মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করে সরকার। নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। তাদের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০১৪ সালের নভেম্বরে। এ ছাড়া দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরে এই সেতুটি প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। খুঁটির ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন, আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন।

 

 

রাইজিংবিডি/৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭/জামাল মল্লিক/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়