ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দিলদারসহ আপন জুয়েলার্সের ৩ মালিককে ফের তলব

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৬ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দিলদারসহ আপন জুয়েলার্সের ৩ মালিককে ফের তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক : আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই গোলজার আহমেদ, দিলদার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে আবারো ৩০ মে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

তাদের ওইদিন (মঙ্গলবার) বেলা ১১টায় কাগজপত্রসহ হাজির হওয়ার জন্য পুনরায় অনুরোধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে বলেন, আপন জুয়েলার্সের আটক স্বর্ণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিলদার আহমেদসহ মালিকপক্ষদের আগামী ৩০ মে বেলা ১১টায় কাগজপত্রসহ হাজির হওয়ার জন্য পুনরায় তলব করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন,  একই সঙ্গে প্রকৃত গ্রাহকদের স্বর্ণালঙ্কার ফেরতের সময় ২৯ মে সোমবার সকাল ১০টায় পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।  এ পর্যন্ত ১৮২ জনের প্রায় ৩.৫ কেজি ফেরতযোগ্য অক্ষত স্বর্ণের হিসাব পাওয়া গেছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত আপন জুয়েলার্সর গুলশানের দুটি শাখা, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কোয়ারের শাখায় শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচটি টিম আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র দিতে কাজ করে। এ সময় আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষ ও বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৭ মে আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই গোলজার আহমেদ, দিলদার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ জিজ্ঞাসাবাদ করে শুল্ক গোয়েন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে জব্দকৃত সোনার অনুকূলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দলিলাদি দেখাতে পারেননি আপন ‍জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ। এরপর তারা নথিপত্র উপস্থাপনে সময় চাইলে তাদের ২৫ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।

গত ১৪ ও ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দা আপন জুয়েলার্সের গুলশানের দুটি শাখায়, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কোয়ারের শাখায় অভিযান পরিচালনা করে সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণালঙ্কার ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড ব্যাখ্যাহীনবাবে মজুদ থাকার দায়ে সাময়িকভাবে আটক করা হয়। বৈধ দলিলাদি দেখাতে না পারায় এবং আমদানি ও ক্রয়ের উৎস সন্দেহজনক হওয়ায় সেগুলো সাময়িকভাবে জব্দ করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণে মধ্যে ১০ কিলোগ্রামের বেশি স্বর্ণ গ্রাহকের রয়েছে দাবি করে জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ।

প্রথমবারের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ বলেন, ‘গত ৪০ বছর ধরে সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। আমার দোকানে কোনো অবৈধ জিনিস (স্বর্ণ-হীরা) নেই। তারা আমাদের স্বর্ণ ও ডায়মন্ড জব্দ করেছে। আমরা পেপার্স শো করব। সময় নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আপন জুয়েলার্সের মাধ্যমে ২ লাখ মানুষ বাঁচে। আমাদের একটি সাইনবোর্ড আছে। এটা বৈধ ব্যবসা। গত ৫ বছরে কোন স্বর্ণ আমদানি নেই। রিসাইক্লিং করে এ সব স্বর্ণ তৈরি করা হয়। আপন জুয়েলার্স যেভাবে রিসাইক্লিং করে ব্যবসা করে সারা দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা একইভাবে ব্যবসা করে। আমার দোকান যদি বন্ধ করা হয় তাহলে সারা দেশের সকল স্বর্ণের দোকান বন্ধ করা উচিৎ। স্বর্ণ আমদানির সঙ্গে শুল্কের ব্যাপার রয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দার দায়িত্ব আছে আমাদের কাগজপত্র দেখা ও অভিযুক্ত করার। আমাদের থেকে যদি উপযুক্ত প্রমাণ তারা পায় তাহলে আমাদের শো-রুমগুলো কর্তৃপক্ষ খুলে দেবে।’

গত ২৮ মার্চ দ্য রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ করে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত ও তার বন্ধুরা। ৬ মে রাতে ভুক্তভোগীদের একজন বনানী থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এরপরই শুল্ক গোয়েন্দা আপন জুয়েলার্সে অবৈধ স্বর্ণালঙ্কারের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মে ২০১৭/এম এ রহমান/উজ্জল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়