ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

যাত্রী আছে, ট্রেনের খবর নেই

আজাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যাত্রী আছে, ট্রেনের খবর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাল ঈদ। বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ।  সকাল থেকেই কমলাপুর রেল স্টেশনে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রত্যেক স্টেশনে বেশিক্ষণ থামানোর কারণে বেশ কয়েকটি ট্রেনের শিডিউলে বিপর্যয় ঘটে। ফলে কমলাপুর প্লাটফর্ম জনস্রোতে রূপ নেয়।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেখা যায় অধিক যাত্রী উঠা নামার কারণে ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে। রংপুরের কিছু যাত্রী সকাল থেকেই কমলাপুরে অবস্থান নিয়েছেন ট্রেন ধরার আশায়। ঈদ স্পেশাল-১ ট্রেনে টিকিট পেয়েছিলেন রাজিয়া, ময়না ও ফাতেমা।কিন্তু কখন সে ট্রেন আসবে তার কোনো উত্তর মিলছে না।

কমলাপুর রেল স্টেশন জুড়ে যাত্রীদের এমনই হা-হুতাশ। যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের আগে এসে পৌঁছালেও ট্রেনের দেখা মিলছে না। আর যে দু’একটি ট্রেন আসছে, থামার আগেই তাতে উপচে পড়ছে ভিড়।

চট্টগ্রামগামী চট্টলা ট্রেনটি কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার সময় বেলা ১১টায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রেনটি ঢাকায় প্রবেশ করে। সেটি ছাড়তে আরো কিছুক্ষণ দেরি হবে বলে জানায় যাত্রীরা।

পেশায় চাকরিজীবী কিছু যাত্রী জানান, সকল দুর্ভোগের কথা জেনেই বাড়ির পথ ধরেছি। শুধুমাত্র পরিবারের কাছে পৌঁছানোর আশায়। ট্রেনে টিকিট কাটলেও ভিড়ের কারণে নিজের সিটের কাছে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা আগেই স্টেশনে এসেছি। জানি না কখন ট্রেনটি ছাড়বে। আর কখনই বা গন্তব্যে পৌঁছাবে।

কমলাপুর স্টেশন জুড়ে মানুষের শুধুই অপেক্ষা। কোনো একটি ট্রেন এসে থামলেই সেটির যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে গিয়ে উঠছেন।সবারই লক্ষ্য, কোনো রকমে নিজের আসনটি দখল করা। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন যারা পরিবার নিয়ে উঠতে যাচ্ছেন তারা।

চট্টলা ট্রেনটি এসে থামার সঙ্গে সঙ্গেই যেদিক থেকে পারেন সেদিক থেকেই যাত্রীদের উঠতে দেখা গেছে। কেউ জানালা, কেউ দরজা দিয়ে বগিগুলোতে ওঠার চেষ্টায়রত।

অন্যদিকে ছাদে ওঠার প্রতিযোগিতাও চলছে। নিরাপত্তাকর্মীরা একদিক থেকে নামিয়ে দিচ্ছেন, অন্যদিকের ছাদ ভরে যাচ্ছে যাত্রীতে। এ অবস্থায় নিরাপত্তা কর্মীরাও হিমসিম খাচ্ছেন। তবে মানুষকে আটকানোর দায় বুঝতে পেরে এ অনিয়ম দেখেও না দেখার ভান করছেন কোনো কোনো নিরাপত্তা কর্মী।

ঈশ্বরদী থেকে ছেড়ে আসা ৫০১ নম্বর ফার্স্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি ঢাকায় আসার কথা সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে। কিন্তু ট্রেনটির খবর নেই। এ ট্রেনটিরই আবার ঢাকার যাত্রী নিয়ে ঈশ্বরদী যাওয়ার কথা। যাত্রীরাও স্টেশনে অপেক্ষমাণ।

সালাউদ্দিন নামে এ ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা এক যাত্রী বলেন, নিরাপদে যাওয়ার জন্যই ট্রেনে যেতে চাই। কিন্তু ট্রেনটি এখনো ঢাকাতেই পৌঁছেনি। কাল ঈদ। জানি না আদৌ তার আগে বাড়ি পৌঁছাতে পারবো কি-না। চারদিক থেকেই পথের নানা ভোগান্তির খবর পাচ্ছি।

স্টেশন মাস্টার সিতাংশু চক্রবর্তী রাইজিংবিডিকে বলেন,  ঈদের আগের দিন স্বাভাবিকভাবেই একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়েন। এ কারণে সারা দেশের রেলপথ, সড়কপথ, নৌ-পথ সবই ব্যস্ত থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আমরা সচেতন আছি, যাতে যাত্রীদের অপেক্ষা দীর্ঘ না হয়।

এগারসিন্দুর প্রভাতী, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, কাকলী এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, সিল্ক সিটিসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা সবাই আছেন ট্রেনের অপেক্ষায়।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫/আজাদ/দিলারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়