ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পরকীয়া এবং স্বামী হত্যার অভিযোগ নাকচ করলেন বর্ণি

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরকীয়া এবং স্বামী হত্যার অভিযোগ নাকচ করলেন বর্ণি

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বর্ণি

মাগুরা প্রতিনিধি : সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক এবং স্বামী হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ নাকচ করলেন বনানী বশির বর্ণি।

আজ সোমবার বিকেলে মাগুরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন বর্ণি। সংবাদ সম্মেলনে বর্ণির বাবা বশির আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচিত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের সঙ্গে বর্ণির প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং সেই সম্পর্কের জেরে বর্ণির স্বামী এসআই আকরাম হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে- এমন অভিযোগ করেন আকরামের বোনেরা।

গত শুক্রবার ঝিনাইদহের স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিহত এসআই আকরাম হোসেনের বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি অভিযোগ করেন, বাবুল আক্তারের সঙ্গে বর্ণির পরকীয়ার জেরে এসআই আকরামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এ সময় নিহত আকরামের পাঁচ বোনের সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডে গুলি করে ও কুপিয়ে তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর দীর্ঘ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত এবং একপর্যায়ে চাকরিতে ইস্তফা দেন বাবুল আক্তার। মিতু হত্যায় তাকেও কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বর্ণি বলেন, ‘আমার ননদ জান্নাত আরা রিনি দুইদিন আগে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন- এসপি বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে আমি স্বামী আকরামকে হত্যা করেছি-  তার এ অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে আমার স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ২০১৫ সালে ১৩ জানুয়ারি মারা গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘সে সময় ননদ রিনি ফুফাত ভাইয়ের সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে আমার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তোলেন। মিথ্যা এ অভিযোগে ফুফাত ভাই সাদিকুল হক মুন, বাবা-মা ও আমাকে আসামি করে সে সময় আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশি তদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টে যা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।’

বর্ণি অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমার মেয়ের নামে ঢাকায় স্বামীর রেখে যাওয়া ফ্ল্যাট ও শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য তিনি (রিনি) এ সব করছেন।’ 

সংবাদ সম্মেলনে বর্ণি বলেন, ‘ননদ রিনি ও অপর ননদের জামাই রশিদ চেয়ারম্যান তাদের ভাড়াটিয়া মাস্তান বাহিনী দিয়ে আমাকে ও আমার মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এখন আমি  নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যে কারণে ঝিনাইদহে বাবার বাড়ি ছেড়ে মাগুরা শহরে এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে রয়েছি। আমার মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজন ভয়ে ঝিনাইদহে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছেন না।’

বক্তব্য রাখছেন নিহত আকরাম হোসেনের বোন রিনি


বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরকীয়া ও তার মাগুরার বাড়িতে বসবাসের বিষয়ে বর্ণি বলেন, ‘বাবুল আক্তারকে আমি চিনি না। কোনো দিন দেখিনি।  পরকীয়া ও তার বাড়িতে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। সব কথা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তবে শুধু আইনি সহায়তার জন্য বাবুল আক্তারের ভাই আইনজীবী লাবুর সঙ্গে আমার পরিচয়।’ 

এ ব্যাপারে বর্ণির ননদ ঝিনাইদ শহরে বসবাসকারী জান্নাত আরা পারভীন রিনির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঁচ বোনের একমাত্র ভাই এসআই আকরাম হোসেন নিহতের পর ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে মৃতদেহ দাফন করা হয়। পরে আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রায় এক মাস পরে কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়। কিন্তু সে সময় ভাবি বর্ণির সঙ্গে পরকীয়ার কারণে এসপি বাবুল আক্তার প্রভাব বিস্তার করে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও পুলিশি তদন্ত উল্টে দেন।’ 

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার সম্পত্তির মালিক স্ত্রী, সন্তানরা হবেন- এটাই নিয়ম। নিজের অপকর্ম ঢাকতে বর্ণি আমাদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। বর্ণি তার আত্মীয়-স্বজনদের ভয়ভীতি দেখানোর যে অভিযোগ তুলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’



রাইজিংবিডি/মাগুরা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/বকুল 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ