ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘অশনি সংকেত’ দেখছে বিএনপি

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ২২ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘অশনি সংকেত’ দেখছে বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যকে ‘অশনি সংকেত’ অভিহিত করে তা দেশের পরিস্থিতিকে ‘আরো নৈরাজ্যকর’ করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) একটি দলীয় সভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট, বিচার বিভাগ, বিচারকবৃন্দ এমনকি প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা বিচলিত ও হতবাক হয়েছি।’

‘বর্তমান ক্ষমতাসীনরা রায়ের কারণে বিচার বিভাগকে আক্রমণের টার্গেটে পরিণত করে যে পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন তা দেশ, জাতি ও রাজনীতির জন্য এক অশনি সংকেত বলেই আমরা মনে করি।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের অপছন্দের রায় দেওয়ার কারণে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তার বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতিকে সরে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছেন এবং বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে জনগণকে উস্কে দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন। এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দেশের পরিস্থিতিকে আরো নৈরাজ্যকর করে তুলতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমান সংসদ ও সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে তারা জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব করে না। তবুও যেভাবেই হোক শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদে আছেন। এমন একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে তিনি যেভাবে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রকাশ্যেই পারস্পরিক সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন তা আগুন নিয়ে খেলার শামিল।’

অতীতে ক্ষমতাসীনরা ‘রায় পছন্দ না হলে বিচারকদের বিরুদ্ধে লাঠি মিছিল, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বস্তি বসানো, প্রধান বিচারপতির এজলাস ভাঙচুরের’ ঘটনাও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এবার তারা (আওয়ামী লীগ) প্রধান বিচারপতিসহ উচ্চ আদালতকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। বিচার বিভাগের ব্যাপারে তাদের নীতিই হচ্ছে, বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার।’

প্রধান বিচারপতিকে সরে যেতে আওয়ামী লীগের আল্টিমেটাম সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেহেতু তারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় বসেনি, জবরদখল করে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা। এজন্য বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এসব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চায়।’

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মনে করেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই নিঃসন্দেহে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রের তিনটি প্রতিষ্ঠান যদি একটা আরেকটার সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থায় থাকে তাহলে কোনোভাবে শুভ লক্ষণ নয়। দুঃখজনক হলো আজকে সরকার প্রধান যিনি নির্বাহী বিভাগের প্রধান তিনি নিজে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন এবং বিচার বিভাগকে সরকারের ‍মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন, বিচার বিভাগকে বালকসুলভ না হওয়ার জন্য।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান ঢালী, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ আগস্ট ২০১৭/রেজা/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়