ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জঘন্যতম মিথ্যাচার হয়েছে: গণপূর্তমন্ত্রী

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০০, ১৩ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জঘন্যতম মিথ্যাচার হয়েছে: গণপূর্তমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে জঘন্যতম মিথ্যাচার হয়েছে। এক সময় প্রমাণিত হলো সেটি সত্য নয়।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে কিছু ঘটনা ও রটনা’ এবং ‘মাদার অব হিউম্যানিটি জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক দুটির গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তাত্ত্বিক রাজনীতির কেউ কেউ বলেছিলেন শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আস্ফালন করছে। কিন্তু ইতিহাসের বর্ণাঢ্য ধারায় উজ্জ্বল হয়ে থাকলো, শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দেওয়ার পরও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বললেন, আমি চাই বাংলার মানুষের অধিকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন মাদার অব হিউম্যানিটি বলা হয় তার যুক্তি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘রক্তের উত্তরাধিকার ও আদর্শের উত্তরাধিকার যখন সম্মিলিত হয় তখন অনন্য, অসাধারণ, বর্ণাঢ্য অবস্থান সৃষ্টি হয়। সেটাই হচ্ছেন শেখ হাসিনা।

‘মিয়ানমারের মানুষদের বিপন্ন অবস্থায় যখন সারা বিশ্ব শুধু বিবৃতি দিয়ে, উদ্বেগ প্রকাশ করে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেছে, সমুদ্রের বিশালতার মতো হৃদয় আর পাহাড়ের মতো উচ্চতার দৃঢতা ধারণ করা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেন, বর্ডার খুলে দাও। বিপন্ন মানুষদের মৃত্যুপুরী থেকে রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। সারা বিশ্ব দেখল উন্নয়নশীল একটি ছোট্ট রাষ্ট্র, সেই রাষ্ট্রের স্টেটসম্যান, সারা দুনিয়ার স্টেটসম্যানদের অতিক্রম করে মানবতার একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সুষ্টি করলেন। সে কারণেই তাকে বলা হয় মাদর অব হিউম্যানিটি-বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, কীর্তির মধ্য থেকে যারা অমরত্ব লাভ করতে পারে তেমন মহৎ মানুষের আলোচনা থেকে নিজের জ্ঞান অর্জন করা যায়। অবক্ষয়ের স্রোত থেকে আমাদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে রক্ষা করার জন্য আমাদের স্মরণীয় ও বরণীয় মানুষদের জীবনকে অনুসরণ করা দরকার। আমাদের পূর্বপুরুষ শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এ জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য বিভিন্নভাবে অবদান রেখে গেছেন। তাদের রাজনীতি যাকে ঘিরে বিকশিত হয়েছে, তিনি হলেন ইতিহাসের বরপুত্র, সমকালীন বিশ্বে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি, আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

মন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতি হতে হবে নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য, অপরের কল্যাণে, দেশের মঙ্গলের জন্য। সে রাজনীতির ধারাবাহিকতা শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা’।

তিনি বলেন, ‘মনুষ্যত্ববোধ, চেতনা, মূল্যবোধ, সততা এ জায়গাগুলো বিসর্জন দিলে আমাদের আর পশুর সঙ্গে দূরত্ব থাকে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আইন করে বলা হলো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করা যাবে না। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি, এটাকে তখন সংবিধানের অংশ করা হলো। কতো নিকৃষ্ট যায়গায় আমরা যেতে পারি যে, জাতির জনককে হত্যা করা হয়েছে, এর বিচার করা যাবে না’।

বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে ছিলাম মন্তব্য করে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ৩০ লক্ষ মানুষদেরকে খুন করা মানুষদেরকে ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তালা খুলে দিয়ে বের করে দেওয়া হলো। তাদের বিচার হবে না। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে তাদের গাড়িতে পতাকা উড়লো। আজকে তাদের দাম্ভিকতা চূর্ণ হয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধুর খুনিরা দাম্ভিকতা নিয়ে বলতে পারেনা, খুন করেছি, আমাদের কেউ কিছু করতে পারবে না।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা মহামানব, যারা বরপুত্র, যারা সূর্যসন্তান তাদেরকে আমাদের ধারণ করতে হবে, লালন করতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে। ইতিহাসের দায়বদ্ধতা কাউকে ক্ষমা করবে না।

তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলো। ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন’।

প্রাক্তন তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, প্রাক্তন সচিব ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, বশর গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও আবুল বশর আবু প্রমুখ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ এপ্রিল ২০১৯/নঈমুদ্দীন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়