ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বাবা-মায়ের পাশে শায়িত হলেন তরিকুল

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৩, ৫ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাবা-মায়ের পাশে শায়িত হলেন তরিকুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার নেতাকর্মী ও যশোরের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ভালোবাসায় চিরবিদায় নিলেন বর্ষিয়াণ নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম।

সোমবার যশোর শহরের ঈদগাহ ময়দানে বাদ আসর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় এক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। জানাজা শেষে সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শহরের কারবালা কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

ঈদগাহ ময়দানে জানাজার আগে তরিকুল ইসলামের কফিন বিএনপির দলীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।

জানাজায় পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন তরিকুল ইসলামের বড় ছেলে শান্তুনু ইসলাম সুমিত, ছোট ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

বাবার জন্য দোয়া চেয়ে শান্তুনু ইসলাম সুমিত বলেন, ‘‘বাবা মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছেন। কাজ করতে গিয়ে যদি ভুল বা কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকেন, আপনারা ক্ষমা করে দেবেন। আপনাদের কাছে আমি হাতজোড় করে বাবার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমার বাবার কাছে কারো কোনো পাওনা থাকলে আমরা শোধ করে দেব। আপনার আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’’

আগামী বুধবার বাদ আসর নিজ বাস ভবনে দোয়া মাহফিলে সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেন।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার বক্তব্যে বলেন, ‘‘আমার বাবা আপনাদের সমর্থনে চারবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। চারবার মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে আপনাদের কল্যাণে কাজ করেছেন। জিয়াউর রহমানের জাতীয়বাদী আদর্শ ধারণ করেছেন আমৃত্যু। আমিও যেন বাবার মতো আপনাদের পাশে থাকতে পারি। বাবা যদি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের কারণে কারো কষ্ট দিয়ে থাকেন, তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। আমার বাবা কখনো মানুষে মানুষে বিভেদ করেননি। সর্বস্তরের মানুষ বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন, এ জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’’



তিনি আরও বলেন, ‘‘জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্পিকারের উপস্থিতিতে জানাজা হয়েছে। সেখানে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন উপস্থিত ছিলেন। এ জন্য তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার বাবা যখন অসুস্থ ছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা খোঁজ নিয়েছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’’ 

জানাজায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, তরিকুল ইসলাম আমৃত্যু এ অঞ্চলের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তিনি যশোর উন্নয়নের কারিগর। দলের নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।

জানাজা শেষে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা ও যশোর জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।

এর আগে বেলা আড়াইটায় হেলিকপ্টারযোগে মরদেহ যশোর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে নেওয়া শহরের ঘোপ এলাকার নিজবাস ভবনে। সেখানে তাকে এক নজর দেখার জন্য শত শত নেতা-কর্মী ভিড় করেন। পরে মরদেহ শহরের লালদীঘিপাড়ে দলীয় কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর ঈদগাহ ময়দানে আনা হয় কফিন।

তরিকুল ইসলামকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের ঢল নামে যশোর শহরে। প্রায় এক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে বলে দলীয় নেতাকর্মীদের দাবি। বিপুল সংখ্যক মানুষের শ্রদ্ধা ভালোবাসায় দক্ষিণবঙ্গের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা চিরবিদায় নিলেন। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। যশোর জিলা পরিষদ, যশোর পৌরসভার পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।



রাইজিংবিডি/যশোর/৫ নভেম্বর ২০১৮/বিএম ফারুক/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ