সোধি-বীরত্বে ম্যাচ বাঁচিয়ে সিরিজ নিউজিল্যান্ডের
৩৪ বছর পর দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতল নিউজিল্যান্ড
ক্রীড়া ডেস্ক : শেষ দিনের প্রথম দুই বলেই স্টুয়ার্ট ব্রড তুলে নিলেন দুই উইকেট। তাতে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ইংল্যান্ডের জয়ের আশা জেগেছিল বেশ ভালোভাবেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়টা আর পাওয়া হলো না ইংলিশদের। ইশ সোধির ব্যাটিং বীরত্বে নখ কামড়ানো উত্তেজনার ম্যাচটি ড্র করেছে নিউজিল্যান্ড। ম্যাচ বাঁচিয়ে সিরিজও জিতেছে কিউইরা।
শেষ দিনে ইংল্যান্ড বোলিং করেছে ১০১.৪ ওভার। তবুও নিউজিল্যান্ডকে অলআউট করতে পারেনি। ৩৮২ রান তাড়ায় ৮ উইকেটে ২৫৬ রান করেছে নিউজিল্যান্ড। সাত, আট ও নয় নম্বরে নামা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, ইশ সোধি ও নেইল ওয়াগনার মিলেই খেলেছেন ৩৬৮ বল। সোধি ও ওয়াগনার অষ্টম উইকেটে কাটিয়ে দিয়েছেন ৩১.২ ওভার। ১৬৮ বল আর ১৯৭ মিনিট উইকেটে থেকে ৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন সোধি।
দুই ম্যাচের সিরিজটি ১-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ১৯৯৯ সালের পর প্রথমবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তারা সিরিজ জিতল, আর ঘরের মাঠে জিতল ১৯৮৩-৮৪ সালের পর প্রথমবার। অন্যদিকে ইংল্যান্ড দেশের বাইরে জয়হীন থাকল টানা ১৩ টেস্টে, যা তাদের নতুন রেকর্ড। এর আগে ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৮ পর্যন্ত টানা ১২ টেস্টে জয়হীন ছিল ইংলিশরা।
অথচ শেষ দিনের শুরুটা কী দুর্দান্তই না হয়েছিল ইংল্যান্ডের। চতুর্থ দিনের বিনা উইকেটে ৪২ রান নিয়ে আজ পঞ্চম দিন শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। টম ল্যাথাম ২৫ ও জিত রাভাল ১৭ রান নিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর লক্ষ্যে ব্যাটিং শুরু করেন।
কিন্তু ব্রডের করার দিনের প্রথম বলেই আউট হয়ে ফেরেন রাভাল। লেগ স্টাম্পে হাফভলি বলে মিড উইকেটে মার্ক স্টোনম্যানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পরের বলে গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রস টেলরও (১৩)। তাকে ফিরিয়ে প্রথম টেস্ট উইকেট নেন জ্যাক লিচ। হেনরি নিকোলসকে ফিরিয়ে দেন জেমস অ্যান্ডারসন। লাঞ্চের আগেই নিউজিল্যান্ড হারায় ৪ উইকেট।
তখনো এক প্রান্ত আগলে রাখা ল্যাথাম পঞ্চম উইকেটে বিজে ওয়াটলিংকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন। চা বিরতির আগে ওয়াটলিংকে ফিরিয়ে (১৯) ৪৪ রানের এ জুটি ভাঙেন মার্ক উড। বিরতির পর ল্যাথামের ২০৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংস থামান লিচ।
এরপর দলকে টেনেছেন ডি গ্রান্ডহোম। ৯৭ বলে ৪৫ রান করে তিনি যখন সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরলেন, তখনো দিনের বাকি ২৭ ওভার। কিন্তু ইংল্যান্ডকে হতাশ করেছে সোধি ও ওয়াগনার জুটি। দিনের নির্ধারিত ওভার কাটিয়ে দেন দুজন। কিন্তু সময় বাকি ছিল তখনো। ক্রাইস্টচার্চে কমে এসেছিল আলো।
দিনের শেষ ওভার, বল বাকি আর তিনটি। রুটের বলে ওয়াগনারকে এলবিডব্লিউ দিলেন আম্পায়ার। ওয়াগনার চাইলেন রিভিউ। রিপ্লেতে দেখা গেল, বলটা তার ব্যাটে লেগে প্যাডে লেগেছিল। এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচলেন। কিন্তু সিলি পয়েন্টে ক্যাচ নিয়েছিলেন জেমস ভিন্স। ওয়াগনারকে তাই ফিরিতেই হয় সাজঘরে (১০৭ বলে ৭)। এর পরপরই দিনের খেলা শেষ করে দেন আম্পায়াররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩০৭ ও ২য় ইনিংস: ৩৫২/৯ ডিক্লে.
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৭৮ ও ২য় ইনিংস (লক্ষ্য ৩৮২): ২৫৬/৮
ফল: ম্যাচ ড্র
সিরিজ: দুই ম্যাচের সিরিজ নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: টিম সাউদি
ম্যান অব দ্য সিরিজ: ট্রেন্ট বোল্ট।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ এপ্রিল ২০১৮/পরাগ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন