ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পরিচালকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন ডিওপি : পনির

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ১৮ জুন ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরিচালকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন ডিওপি : পনির

পনির আহম্মেদ। ছবি : সাগর খান

রাহাত সাইফুল : রুপালি পর্দায় ঝকঝকে সিনেমা দেখে আমরা মুগ্ধ হই। একটি সিনেমার অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা এমন কি কণ্ঠশিল্পীদেরও হয়তো চেনেন দর্শক। কিন্তু সিনেমার মতো বিশাল কর্মযজ্ঞের পেছনে থাকে অনেকের মেধা, শ্রম, আন্তরিকতা। তাদের অনেকের নামও হয়তো দর্শকরা জানতে পারেন না। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রেমেরই ফসল হলো একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। পর্দার পেছনে থাকা মানুষগুলোর মধ্যে সিনেমার পরিচালকের পরেই যার অবদান তিনি হলেন ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি (ডিওপি)।


ঢাকাই চলচ্চিত্রে নব্বইয়ের দশক থেকে কাজ করছেন ডিওপি পনির আহম্মেদ। তিনি এ পর্যন্ত শতাধিক সিনেমার ক্যামেরার কাজ করেছেন। সম্প্রতি রাইজিংবিডির বিনোদন বিভাগের সঙ্গে কথা হয় এ ডিওপি-র। তার সঙ্গে আলাপচারিতার সূত্র ধরেই এই বিশেষ সাক্ষাতকার।


রাইজিংবিডি : এখন কি নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
পনির : শুটিং চলতে থাকা সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- পুড়ে যায় মন, গুন্ডামী, মাটির পরী, ক্রাইম রোড, ভুল যদি হয় প্রভৃতি। এ সব নিয়েই ব্যস্ত আছি।


রাইজিংবিডি : ক্যামেরায় কাজ করবেন এমন চিন্তা মাথায় আসলো কিভাবে?
পনির : তেজগাঁও কলেজ থেকে এসএসসি শেষ করি। বিএফডিসির পাশে বাসা থাকায় সিনেমার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। সেই থেকে স্বপ্ন দেখতে শুরু করি সিনেমায় কাজ করার। ফটোগ্রাফি করাটাও পছন্দ করতাম।

আমি যখন এফডিসিতে ঢুকি তখন দেখি, ক্যামেরাম্যানরা সাদা ড্রেস পরে ফিটফাট থাকতো। সাদা রঙের সু, প্যান্ট, শার্ট, বেল্ট পরে একজন হ্যান্ডসাম লোক দাঁড়িয়ে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার কথা সবাই শুনছে। তাকেই সবাই সন্মান করত। সেই চিন্তা থেকেই মাথায় আসে আমিও এই প্রফেশনে কাজ করব। এ ভাবেই ক্যামেরায় কাজ করার স্বপ্ন তৈরি হয়।


রাইজিংবিডি : চলচ্চিত্রে আসার গল্পটা একটু শুনতে চাই?
পনির : এর পরেই আমি এ. আর. জাহাঙ্গীর রহমানের কাছে যাই। তিনি প্রথমে আমাকে আপনি বলে সম্বোধন করেন। এর পরে আমি তাকে বলি আপনার পদধূলি নিতে চাই। তখন তিনি বলেন, একজন সহকারি মানে সবজায়গায় কাজ করতে হবে। কাদা-ধুলা থাকলেও বসে যেতে হবে। এগুলো তুমি পারবে কি-না। আমি শর্তে রাজি হয়ে কাজ শুরু করি।


জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া ডিওপি এ. আর. জাহাঙ্গীর গুরুর সঙ্গে সহকারি হিসেবে কাজ শুরু করি। ওয়াকিল আহম্মেদ পরিচালিত সৎ মানুষ সিনেমার মধ্য দিয়ে আমি কাজ শুরু করি। এর পরে সুজন সখি (রঙিন), স্বপ্নের পৃথিবী, বিচার হবে সহ অসংখ্য সিনেমায় ১২ বছর সহকারি হিসেবে কাজ করেছি।


রাইজিংবিডি : ১৯৯৩ সালে যখন কাজ করেছেন তখন কোনো ক্যামেরা দিয়ে কাজ শুরু করেছেন?
পনির : টু-সি এবং থ্রি-সি ক্যামেরা দিয়ে।


রাইজিংবিডি : কোনো শিল্পীর কাজ বেশি করা হয়েছে?
পনির : সালমান শাহ ও শাকিব খানের কাজ সবচেয়ে বেশি করা হয়েছে। এ ছাড়া আলেক জেন্ডার বো-এর কাজ করেছি। আলেক জেন্ডার বোকে যা বলেছি তিনি সেটাই করেছেন। তাকে দিয়ে এমন কিছু দৃশ্য করিয়েছি যা দেখে মানুষ তাক লেগে গেছে। এ ছাড়া ডিপজল অভিনীত বাধা সিনেমা করতে গিয়ে তাকে দিয়ে টার্নিং করিয়েছি। সিনেমাটিতে ডিপজল খল চরিত্র থেকে বেরিয়ে প্রথম বারের মতো কোনো সিনেমায় ইতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেন।


রাইজিংবিডি : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সিনেমার পরিচালক হতে বেশি সংখ্যক লোক আগ্রহী থাকে, কিন্তু সেটা কেন?
পনির : অনেক পরিচালক আছেন যারা সিনেমার কিছুই বোঝেন না। কিন্তু তাদের পরিচালিত সিনেমাও রিলিজ হয়েছে। এটা তাদের একটা ফ্যাশন। কিন্তু ক্যামেরা সর্ম্পকে কিছু না জানলে সে ডিওপি হতে পারবে না। তাই এই প্রফেশনে তেমন লোক আসতে চাচ্ছে না। তা ছাড়া সিনেমার পরিচালকের সম্মান বেশি।


রাইজিংবিডি : চলচ্চিত্রে কাজ করে আপনার অর্জন কতটু?
পনির : আমি এ পযর্ন্ত শতাধিক সিনেমায় কাজ করেছি। এর মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছে বেশ কিছু সিনেমা। এটাই আমার বড় অর্জন।


রাইজিংবিডি : আপনার অপ্রাপ্তি কী?
পনির : অপ্রাপ্তি হলো এখন পর্যন্ত আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাইনি। এ পুরস্কারটা পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুন ২০১৫/রাহাত/রাশেদ শাওন/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়