ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ফেরার পথে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়

হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫০, ২৪ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফেরার পথে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়

ফাইল ফটো

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে রাজধানীর কর্মব্যস্ত জীবনে ফিরছেন মানুষ। মহাসড়কে যানজট না থাকায় স্বস্তিতেই ফিরছেন তারা। কিন্তু যাত্রীদের জিম্মি করে গলাকাটা ভাড়া আদায় করছেন পরিবহণমালিকরা।

 

একই সঙ্গে ঢাকায় এসে বাস থেকে নেমে যানবাহনের সংকটে পড়তে হচ্ছে তাদের। শুক্রবার ঢাকার রাস্তায় বাস কম থাকার সুযোগে গাড়িগুলো বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। এতে যাত্রীদের দ্বিতীয় দফায় বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে ঢাকায় এসেও।

 

রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং মানিকনগর ঘুরে এসব চিত্র পাওয়া গেছে।

 

রোববার থেকে পুরো ব্যস্ততা বাড়বে রাজধানীতে। তাই ছুটি শেষে গ্রাম থেকে আজ যাত্রীদের ফেরার চাপ ছিল বেশি। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখনো ঢাকামুখী হয়নি শিক্ষার্থীরা।

 

দেশের পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসগুলো সায়েদাবাদ টার্মিনালে এসে থামে। ফলে এখানে গাড়ির চাপ বেশি থাকে। সেখানে ঢাকায় আসা যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের কাছ থেকে দেড় গুণ, দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের প্রায় প্রতিটি বাস নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করেছে। এসব বাস সায়েদাবাদ এসে থামে। একই রুটের কিছু বাস আরামবাগ, রাজারবাগ, মতিঝিল ও ফকিরাপুলে এসে থামে। এসব পরিবহণেও শুক্রবার বেশি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

 

চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে স্পেশাল বাস সার্ভিসগুলো এসি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং ননএসি ৪৩০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া নেয়। কিন্তু সকালে ঢাকায় এসে নামা কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব পরিবহণ ননএসি সার্ভিসে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা ভাড়া আদায় করেছে। আর এসি সার্ভিসে নিয়েছে ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ইউনিক সার্ভিস, এস আলম এবং হানিফ পরিবহণের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

ফেনী-ঢাকা রুটে চলাচল করা স্টার লাইন স্পেশাল এবং ড্রিম লাইন স্পেশালেও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। এই দুটো পরিবহণের ভাড়া এসি ৩৫০ এবং ননএসি ২৭০ টাকা। কিন্তু ঈদের তিন দিন আগে থেকে এখন পর্যন্ত পরিবহণ দুটি বাড়তি ভাড়া আদায় করছে।

 

আজ সকালে স্টার লাইন স্পেশালের ননএসি ভাড়া আদায় করা হয়েছে ৩৫০ টাকা, আর এসি ৫০০ টাকা। একই ভাড়া ড্রিম লাইন স্পেশালেও। তবে এ পরিবহণের এসি সার্ভিস নেই।

 

নোয়াখালী-ঢাকা রুটের নোয়াখালী এক্সপ্রেস, ঢাকা এক্সপ্রেসসহ অন্য পরিবহণের ভাড়া ৩৫০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা করে রাখা হচ্ছে।

 

এ সব রুটের লোকাল ও কাউন্টার সার্ভিসও বাড়তি ভাড়া আদায় করেছে। এর মধ্যে যাত্রীসেবার ১০০ টাকার ভাড়া ৪০০ টাকা, একুশে পরিবহণ ২৫০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা নিয়েছে। 

 

বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে কুমিল্লা-ঢাকা, ভৈরব-ঢাকা, নোয়াখালী-ঢাকাসহ অন্য রুটের বাসেও।

 

এদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে মনিটরিং টিমের কার্যক্রম লক্ষ করা গেছে। সায়েদাবাদ টার্মিনালে মনিটরিং টিমের দায়িত্ব পালনরত আনোয়ার হোসেন নামের এক সদস্য রাইজিংবিডিকে জানান, ঈদের আগে বাসগুলো যাতে বাড়তি ভাড়া না নিতে পারে বা যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী না তুলতে পারে, সেই বিষয়ে তারা লক্ষ রাখছেন। কিন্তু এখন বাসগুলো বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসছে। ভাড়া পরিশোধ করেই তারা বাসে চড়েছেন। সে ক্ষেত্রে ঢাকায় পৌঁছানোর পর তাদের কাছে অভিযোগ করলে, তারা ব্যবস্থা নিতে পারেন।

 

শুক্রবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ ছাড়া মনিটরিং টিমের কাছে সুনির্দিষ্ট বড় কোনো অভিযোগ আসেনি বলেও জানান এই সদস্য।

 

ঢাকার মধ্যে বিভিন্ন রুটে চলাচল করা বাস সায়েদাবাদ থেকে খুব কম সংখ্যক ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে দেখা গেছে কিছু লোকাল পরিবহণকে। তুরাগ পরিবহণ সায়েদাবাদ থেকে এয়ারপোর্ট ও গাজীপুর পর্যন্ত ‘ডাইরেক্ট সার্ভিস’ বলে ৮০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অন্য লোকাল সার্ভিসেও একই অবস্থা।

 

ঢাকায় নেমে যাত্রীরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সিএনজি অটোরিকশার চালকদের দ্বারা। বাস কম থাকায় তিন গুণ ভাড়া আদায় করছে তারা। অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে অটোরিকশার চালকদের বাগ্‌বিতণ্ডা হতে দেখা গেছে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জুলাই ২০১৫/হাসান/বকুল/কমল কর্মকার 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়