ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর অপারেশন নিয়ে বিভ্রান্তি

ডা. সজল আশফাক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০২, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর অপারেশন নিয়ে বিভ্রান্তি

ডা. সজল আশফাক : ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর অপসারণ অর্থাৎ পেট না কেটে পিত্তথলির পাথর অপারেশনের বিষয়টি এখন প্রায় সবাই জানেন। সেই সঙ্গে এই পদ্ধতিতে অপারেশনের সুবিধাগুলোও অনেকেরই জানা। কিন্তু তারপরও এ নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে নানা রকম প্রশ্ন ও ভুল ধারণা।

 

অনেকেই মনে করেন, ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে পিত্তথলির পাথরের অপারেশন করলে আবার পাথর হতে পারে কিংবা ভুলবশত পাথর রয়ে যেতে পারে। সাধারণের এই ধারণা কিন্তু একবারেই অমূলক। যেহেতু পাথরসহ পুরো পিত্তথলিটাই বের করে নিয়ে আসা হয়, সেহেতু পিত্তথলিতে আবার পাথর হবার আশংকা নেই কিংবা পাথর রয়ে যাবারও ঝুঁকি নেই।  কেউ কেউ ভাবেন এই পদ্ধতিতে গলব্লাডারের পাথর ভেঙে দেয়া হয় বা ক্রাশ করা হয়। আসলে ক্রাশ করা বা বাইরে থেকে ভেঙে দেওয়ার পদ্ধতি কিডনির পাথরের বেলাতেই ব্যবহার করা হয়, গলব্লাডারের বা পিত্তথলির পাথরের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।

 

আবার অনেকে জানতে চান, পাথর বেশি হলে, বড় হলে কি এই পদ্ধতিতে অপারেশন করা যায়? এ সম্পর্কে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জনদের উত্তর হচ্ছে, পাথরের সংখ্যা বা আকারের উপর অপারেশনের সাফল্য নির্ভর করে না। পাথর কম-বেশি, বড়-ছোট যে রকমই হোক না কেন ল্যাপারোস্কোপি পদ্ধতি ব্যবহার করা সম্ভব। আগে পেটে কোনো অপারেশন হয়ে থাকলে তারপরও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি সম্ভব।

 

যদিও ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর অপারেশন করার পর একথা প্রায় সব রোগীকেই বলে দেয়া হয় যে, অপারেশনের পর খাওয়া, চলাফেরায় কোনো বাধা নিষেধ নেই। কিন্তু তারপরও অনেক রোগীই সেটা ঠিক বিশ্বাস করতে পারেন না, তারা সাধারণ চলাফেরায় ভয় পান। তাদের এই ভয় একবারেই ভিত্তিহীন।

 

অপারেশনের পরপরই সাধারণ চলাফেরা এবং খাওয়া-দাওয়ায় কোনো নিষেধ নেই। অপারেশনের ৫-৭ দিন পর থেকেই রোগী স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেন। অপারেশনের ৪-৫ ঘণ্টা পরই তরল খাদ্য খেতে দেওয়া হয় আর ১২ ঘণ্টা পর থেকে স্বাভাবিক সব খাবারই খাওয়া যেতে পারে। বিশেষ ধরনের ব্যান্ডেজ ব্যবহার করলে পরদিন থেকে নিয়মিত গোসলও করা যেতে পারে।

 

ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর অপারেশন নিয়ে অযথা বিভ্রান্তিতে ভোগা ঠিক নয়। যখন ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর অপারেশন করা যাবে না তখন চিকিৎসকই বিষয়টি রোগীকে যৌক্তিকভাবে অবহিত করবেন। এ পদ্ধতিতে পেট না কেটে ছোট্ট ছিদ্র করে তার মধ্য দিয়ে ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে যন্ত্রের সাহায্যে এটি করা হয়। সনাতন পদ্ধতিতে একই অপারেশন করা হয় পেট কেটে। এ ক্ষেত্রে মূল অপারেশনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।

 

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, নাক কান গলা বিভাগ, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল



 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জানুয়ারি ২০১৬/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়