ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বিশ্ব জলাভূমি দিবসে বক্তারা

জনকল্যাণ নিশ্চিতে জলাভূমি সংরক্ষণের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
জনকল্যাণ নিশ্চিতে জলাভূমি সংরক্ষণের দাবি

ছবি: রাইজিংবিডি

অপরিকল্পিত শিল্পায়ন-নগরায়ণ, দখলদারত্ব ও ভরাটের কারণে প্রতিনিয়ত আমাদের জলাভূমিগুলো সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে আমাদের জীবন-জীবিকা, খাদ্যব্যবস্থা ও পরিবেশের ওপর। বাড়ছে সুপেয় পানির সংকট। ভবিষ্যতে এই সংকট আরও বাড়বে। পানিকে কেন্দ্র করে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ গ্রহণ করা হয়েছে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায়ও (এসডিজি) জলাভূমি রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জনকল্যাণ নিশ্চিতে এবং জীবন-জীবিকা রক্ষায় জলাভূমি রক্ষার বিকল্প নেই।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘জনকল্যাণ নিশ্চিতে সব জলাভূমি দখল ও দূষণমুক্ত করা হোক’ শীর্ষক কর্মসূচি থেকে বক্তারা এসব কথা বলেন। রিভার ডেলটা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট যৌথভাবে এ আয়োজন করে। কর্মসূচি থেকে বসিলা ব্রিজ হয়ে গুদারাঘাট কলাতিয়া পর্যন্ত পরিদর্শন করা হয়।

পরিদর্শন কর্মসূচি থেকে দেখা যায়, বসিলা ব্রিজ থেকে গুদারাঘাট কলাতিয়া পর্যন্ত অঞ্চলে একাধিক ইটের ভাটা রয়েছে এবং বুড়িগঙ্গা নদীর পানি শিল্প দূষণের প্রভাবে কালো হয়ে গেছে। প্লাস্টিক বর্জ্য, গৃহস্থালী বর্জ্যের কারণে নদীটি পর্যুদস্ত অবস্থায় রয়েছে। বিভিন্ন প্রাইভেট হাউজিং কোম্পানিও আবাসন তৈরির জন্য নদীটি দখল করে নিচ্ছে।

পরিদর্শন পরবর্তী সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ জলাভূমিতে বছরের অর্ধেক সময় শস্য উৎপাদন হয় এবং বাকি সময় মাছ চাষ হয়ে থাকে। জলাভূমিতে চাষ হওয়া মাছ আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রোটিনের উৎস। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামে আমাদের নদী-জলাভূমিগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, খাদ্য নিরাপত্তা–সবই হুমকির সম্মুখীন। টেকসই উন্নয়নের ১৪টি লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গেই জলাভূমির সম্পৃক্ততা রয়েছে। সুতরাং এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে সরকারকে জলাভূমি রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু বিপর্যয়ে সেভাবে ভূমিকা না থাকলেও আমাদের দেশে এর ক্ষতিকর প্রভাব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভবিষ্যতে আমাদের অধিকাংশ জলাভূমি বিলুপ্তির আশঙ্কা রয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর রক্ষা, ঝড়ের সময় সুরক্ষা, ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জলাভূমি। উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় জলাভূমি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ডেলটা ডেল্টা প্ল্যানের মূল স্তম্ভ বন্যা, নদীভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা। এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা আবশ্যক।

বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন আরডিআরসির চেয়ারম্যান মো. এজাজ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, স্বপ্নের সিঁড়ি সমাজ কল্যাণ সংগঠনের উম্মে সালমা, শিশুদের মুক্ত বায়ু সংস্থার সদস্য সচিব মো. সেলিম ও মো. মানিক।

/এসবি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়