ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ট্রাম্প-ইভানকার চুল পরিচর্যায় ব্যয় কত

ছাবেদ সাথী, নিউ ইয়র্ক সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১০:২৬, ৯ অক্টোবর ২০২০
ট্রাম্প-ইভানকার চুল পরিচর্যায় ব্যয় কত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছরই কোনো আয়কর দেননি। নিজের কোম্পানিগুলোর লোকসান দেখিয়ে তিনি বছরের পর বছর আয়কর এড়িয়েছেন। এই যখন অবস্থা, তখন চুলের পেছনে তার ব্যয় শুনলে চমকে উঠতে হয়।  

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প চুলের পরিচর্যায় ব্যয় করেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৪ ডলার।

খবরে জানা গেছে, টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য ট্রাম্প চুলের পরিচর্যায় ৭০ হাজার ডলার ব্যয় করেছেন। মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পের চুলের পরিচর্যার পেছনে ট্রাম্পের মালিকানাধীন নয়টি কোম্পানির ব্যয় ৯৫ হাজার ৪৬৪ ডলার। আর অবকাশযাপন কেন্দ্র মার-এ-লেগোতে অবস্থানের সময় আলোকচিত্রীর পেছনেই ট্রাম্পের ব্যয় ২ লাখ ১০ হাজার ডলার। ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত শুধু গলফ কোর্সেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড়িয়েছেন ৩১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

এখানেই শেষ নয়, ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যবসায়িক ব্যয়ের আওতায় পরামর্শক ফি বাবদ ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয় করেছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। যার একটি অংশ গেছে মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পের মালিকানা রয়েছে এমন কোম্পানিতে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আয়ের বার্ষিক হিসাব প্রকাশ করা হয়। সে সময় তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অথচ একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আয়কর পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিসকে (আইআরএস) তিনি জানিয়েছেন, তার ব্যবসায়িক ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। ঋণের পরিমাণ ৪২ কোটি ১০ লাখ ডলার। এসব ঋণের অধিকাংশই আবার পরিশোধের নির্ধারিত সময় আগামী চার বছরের মধ্যে।

নিউইয়র্ক টাইমস–এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। এতে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়ের একটি বড় অংশ আসে অন্য দেশ থেকে। এর পরিমাণ ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার।  যা প্রেসিডেন্ট হিসেবে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাত তৈরি করে। এই অর্থের মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার আসে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে থাকা ট্রাম্প টাওয়ার থেকে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেখান থেকে ট্রাম্পের আয় ১০ লাখ ডলার বেড়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প শুধু কর এড়িয়ে চলেন, তাই নয়। তিনি একই সঙ্গে আগে পরিশোধিত কর ফেরতও চান। সংখ্যার হিসেবে এ অঙ্কও বেশ বড়। গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ৭ কোটি ২৯ লাখ ডলারের কর রিফান্ড চেয়ে আবেদন করেছিলেন, যা গ্রহণও করা হয়। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তার পরিশোধিত সব কর এর আওতাভুক্ত। বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সেবা প্রতিষ্ঠানের (আইআরএস) সঙ্গে মার্কিন নিরীক্ষা বিভাগের লড়াই চলছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০০০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতি বছর ১৪ লাখ ডলার আয়কর পরিশোধ করেছেন। অথচ তার পর্যায়ের আয় রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের বার্ষিক পরিশোধিত আয়কর হওয়ার কথা অন্তত ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছেন, তা জরিমানাসহ পরিশোধ করতে চাইলে আইআরএসকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হতে পারে।

তবে বরাবরের মতো সবকিছু অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি আসলে কর দিয়েছি। আমার কর রিটার্ন দেখলেই বুঝতে পারবেন। অনেক দিন ধরেই এর অডিট চলছে।’

অন্যদিকে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের আইনজীবী অ্যালান গার্টেনের দাবি, ২০১৫ সালের পর থেকে প্রতি বছর প্রেসিডেন্ট ব্যক্তিগত আয়কর হিসেবে ‘টেনস অব মিলিয়নস অব ডলারস’ পরিশোধ করেছেন।  যদিও কোনো নির্দিষ্ট অঙ্ক তিনি জানাতে পারেননি।

ঢাকা/জেডআর

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়