ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

‘আমাদের কাছে পূজা মানেই শিকদার বাড়ির দুর্গাপূজা’ 

আলী আকবর টুটুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ২৫ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ০৮:৫৭, ২৬ অক্টোবর ২০২০

‘আমাদের কাছে পূজা মানেই শিকদার বাড়ির দূর্গাপূজা। এবার শিকদার বাড়িতে বাড়তি আয়োজন নেই। তারপরও আমরা এখানে ছুটে এসেছি। মা দুর্গাকে দর্শন করেছি। প্রার্থনা করেছি। এটাই বড় ব্যাপার।’ 

আজ রোববার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে দুর্গাপূজার নবমীতে বাগেরহাটের শিকদার বাড়ির পুজামণ্ডপে আসা বাধন ও সোনালী সাহা এভাবে নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন। শুধু তারা নয়, এমনই অভিব্যক্তি পুজামণ্ডপে আসা ভক্তদের। 

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দূর্গাপূজা মানেই বাগেরহাটের হাকিমপুর গ্রামের শিকদার বাড়ির দুর্গাপূজা। প্রতিমার সংখ্যার দিক দিয়ে এই পূজামণ্ডপ এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ। প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও পাশের দেশ ভারত, নেপাল থেকে মানুষ এখানে পূজা দেখতে আসে। গত বছরে ৮৫১টি প্রতিমা দিয়ে এই মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে মূল মন্দিরে শুধু মা দূর্গার প্রতিমা দিয়েই শেষ হচ্ছে এবারের পূজা। তারপরও সনাতন ধর্মালম্বীরা মা দূর্গার টানে ছুটে এসেছেন এই মন্দিরে। 

খুলনার ডুমুরিয়া থেকে আসা জয়তী মন্ডল, সাথী পাল, প্রণব বিশ্বাস বলেন, তারা প্রতি বছরই শিকদার বাড়িতে আসেন। এ বছর আগেই শুনেছেন শিকদার বাড়িতে তেমন আয়োজন থাকবে না। তারপরও এসেছেন মা দুর্গাকে দেখতে। এখানে এসে খারাপও লেগেছে, আগের সেই আমেজ নেই দেখে। তারা মা দূর্গার কাছে পৃথিবী থেকে করোনা মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন। 

ঝালকাঠি জেলা থেকে আসা উৎপল, ননী গোপালসহ কয়েকজন বলেন, বাড়তি আয়োজন না থাকলেও শিকদার বাড়িতে এসে তাদের ভালো লেগেছে। তারা চান, আগামী বছর শিকদার বাড়িতে আগের সেই আমেজ যেন ফিরে আসে। 

শিকদার বাড়ি পূজামণ্ডপের আয়োজক লিটন শিকদার বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে এবারের দূর্গাপূজা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। প্রথম থেকে মণ্ডপে আসার জন্য ভক্ত ও দর্শনার্থীদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তারপরও প্রাণের টানে মা দূর্গার দর্শন পেতে অনেকে এসেছেন। 

তিনি বলেন, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপন করতে। আগামী দূর্গাপূজার আগে পৃথিবী যদি স্বাভাবিক হয়, তাহলে আগের মতো আয়োজনে পূজা করবেন বলে জানান শিকদার বাড়ি পূজামণ্ডপের আয়োজক লিটন শিকদার। 

২০১১ সালে বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের শিকদার বাড়িতে ২৫১ প্রতিমা নিয়ে এই মণ্ডপের যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরই বাড়তে থাকে প্রতিমার সংখ্যা। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে প্রতিমার সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৫১টি। ২০১৭ সালে ৭০১টি এবং ২০১৮ সালে ৮০১টি প্রতিমা নিয়ে শিকদার বাড়িতে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৮৫১টি প্রতিমা স্থাপন করা হয় এই মণ্ডপে।
 

ঢাকা/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়