ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মানিকগঞ্জে পুলিশের হাতে সাংবাদিক ‘লাঞ্ছিত’

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২০:১৩, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
মানিকগঞ্জে পুলিশের হাতে সাংবাদিক ‘লাঞ্ছিত’

মানিকগঞ্জে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন, ‘দুই জনের মধ্যে নিছক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের সাফুল্লি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে ওসির মৌখিক অনুমতিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নির্যাতিত ওই সাংবাদিক গভীর রাতে বাসায় ফেরেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম সাব্বির অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমের সাভার প্রতিবেদক ও দৈনিক মানবকণ্ঠের সাভার সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা জেলার সাবেক সভাপতি। ঢাকার ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সাব্বির।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিয়া উজ্জ্বল। এছাড়া অভিযুক্ত আরও দুই পুলিশ সদস্যের পরিচয় জানা যায়নি।

শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাব্বির বলেন, ‘‘গতকাল সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বন্ধু মাহবুবের বাসায় বেড়াতে যাই। কয়েকজন মিলে রাত ১২টার দিকে বন্ধুর বাড়ির পাশেই দাঁড়িয়ে গল্প করছিলাম। সেসময় মাহবুবের এক স্বজনকে পুলিশ জোর করে থানায় নিয়ে যাচ্ছে- এমন ঘটনা দেখতে পাই। ঘটনার বিষয়ে জানতে এগিয়ে যাই।

‘পুলিশের ওই কর্মকর্তা ‘ওই দৌড়াস কেন?’ বলে মন্তব‌্য করেন। আমি উনাকে বলি, ‘আপনি তুই তুকারি করে বলছেন কেন?’ এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘পোশাক পরা আমাকে তুই বললি কেন? আসামি ছিনিয়ে নিতে চাস তুই?’ এ কথা বলে তিনি আমাকে ধাক্কা দিতে থাকেন।”

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বারবার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরেও আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এসময় দ্রুত এক কনস্টেবল ছুটে এসে আমার পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে আটক করে সিএনজিতে তুলে থানায় ওসি সাহেবের কাছে নিয়ে যান। ওসি আশরাফ সাহেব পুরো বিষয়টি শুনে নিজে দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে নিজের গাড়িতে আমাকে বাসায় পৌঁছে দেন।’’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মচারী মাহবুব আলম বলেন, ‘আরিফ গতকাল আমার এলাকায় ওরশ দেখতে আসছিল। তখন আমার এক আত্মীয়কে পুলিশ টাইনা হ্যাঁচরাইয়া নিয়া যাইতেছিলো। আমরা ওই দিকেই ছিলাম। কৌতুহলবশত আমরা এগিয়ে যাই। আমরা জিজ্ঞাস করছি, ওনারে ওইভাবে নিয়া যাইতেছেন কেন? এ কথা জিজ্ঞাসা করার পর পুলিশ আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব‌্যবহার করে। চার জন পুলিশ ছিলেন। সেসময় এএসআই বলেন, অই (আরিফ) আসামি ছিনতাই করতে আসছে, অরে নিয়া চল।’

অভিযুক্ত সাটুরিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিয়া উজ্জ্বল বলেন, ‘রাত ১২টা বাজে ওয়ারেন্টের আসামি ধরতে গেছিলাম। অন্ধকারে কিছুইতো দেখা যায় না, বুঝঝেন ভাই। ওই সময়তো ও (সাংবাদিক) দৌড়ায় আসতেছে। আমি বলছি, দৌড়ায় আসতেছেন কে আপনি? মানে আমি যে পোশাক পরা না কি দ্যাহাও যায় না? আমারে বলতাছে যে তুই কেডা? আমি বললাম, আমিতো পুলিশ আসামি ধরতে আইছি। কয় আসামিটা ছাইরা দে তুই। এরকম একটু কথাবার্তা হইছে, পরে কইছি যে চলেন থানায় যাই। পরে স্যারের গাড়িতে করে রাতে বাসায় দিয়া আসছি।’

এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, ‘রাত্রিতো তখন সাড়ে ১২টা বাজতেছিলো। সে (সাংবাদিক) ভাবছে আসামি জোর করে নিয়া আসতেছে তখন একটু দুই জনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হইছে। আমি যতটুকু পারছি দুইজনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা সলভ করার চেষ্টা করেছি।’ 

মারধর ও লাঞ্ছিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলেতো ওই রকম কিছু না। দুই পক্ষ দুইভাবে বলতেছে আর কি।’

চন্দন/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়