ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

৮ বছর পর ঈশ্বরদী আ.লীগের সম্মেলন, ২ গ্রুপে উত্তেজনা

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  
৮ বছর পর ঈশ্বরদী আ.লীগের সম্মেলন, ২ গ্রুপে উত্তেজনা

আট বছর পর আগামীকাল বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন ঘিরে ইতোমধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

দলের মধ্যের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় উৎকণ্ঠায় থাকা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যেন সম্মেলন সম্পন্ন হয়।

দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১১ জুন ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। ৮ বছর পর এবারের সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহের পাশাপাশি রয়েছে উৎকণ্ঠা। ইতোমধ্যে সম্মেলনে দলের দুই গ্রুপ থেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম। দুই পক্ষ তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর দেখা দিয়েছে উত্তেজনা।

স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাসের পক্ষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন যথাক্রমে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাস এবং সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু।

সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুজ্জামান শরীফের পরিবারের পক্ষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন যথাক্রমে পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সদস্য সাকিবুর রহমান শরীফ কনক।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিতসভা ঘিরে দুই পক্ষ শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের শান্ত করে। এর আগে গত  ২৩ সেপ্টেম্বর সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বাসভবন থেকে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার দিনে সংঘর্ষের আশঙ্কায় দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সম্মেলন ঘিরে দলের দ্বন্দ্ব এবার প্রকাশ্যে এসেছে। নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা শঙ্কা বিরাজ করছে। রয়েছে বিভিন্ন হুমকির অভিযোগ।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাকিবুর রহমান শরীফ কনক বলেন, ‘সম্মেলন ঘিরে আমাকে ও আমার কর্মীদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থী ঘোষণার দিন কোনো কারণ ছাড়াই আমার বাড়িতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আমরা নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবো, তৃণমূলের ভোটের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্মেলন করা হোক।’ 

সভাপতি প্রার্থী পৌর মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, ‘দলে কোনো বিভক্তি নেই, তবে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে। একটা বড় দল, উৎসাহ বেশি। সম্মেলন শেষে সব ঠিক হয়ে যাবে। দলের কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা ভোটের মাধ্যমে হোক আর কেন্দ্রে গিয়ে হোক, যেভাবে নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন আমরা তাতেই রাজি।’ 

অপরপক্ষের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, ‘ঈশ্বরদীতে আওয়ামীলীগের রাজনীতি মানুষের কাছে আস্থা অর্জন করেছে। তাই দীর্ঘদিন পর সম্মেলন ঘিরে সবার উৎসাহও বেশি। সম্মেলনে একাধিক প্রার্থী থাকবে, তবেই না উৎসবমুখর পরিবেশ হবে। আশা করি ভালোভাবে সম্মেলন হবে।’ 

পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না যে এখানে কোনো বিভক্তি আছে। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। দলের নেতারা ঠিক করবেন কাদের কাঁধে নেতৃত্ব তুলে দেবেন। এ নিয়ে বিচলিত বা আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। কাউকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।’ 

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল হক পুনো বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগ দুর্বল নয়, বরং আরও শক্তিশালী হবে। যারাই নেতৃত্বে আসুক না কেন দলকে সামনে আরও এগিয়ে নেবেন। কোনো বিভক্তি থাকবে না। সম্মেলন শেষে সবাই একসঙ্গে কাজ করবেন।

শাহীন/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়