ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হাটের জমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ

ঠাকুরগাও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪১, ১৪ অক্টোবর ২০২১  
হাটের জমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ে হাটের কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মণ করছেন দুই আওয়ামী লীগ নেতা বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত আওয়ামী লীগে নেতারা েহলেন পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইমদাদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারকি না থাকায় জেলার পীরগঞ্জ পৌর শহরের চৌরাস্তা হাটের এই জমি উদ্ধার হচ্ছেনা বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এদিকে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন  দুই আওয়ামী লীগ নেতা। 

স্থানীয় ভূমি অফিস সুত্র জানা যায়, ১৯৮৪-৮৫ এবং ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছর দুটি মিস কেসের মাধ্যমে চৌরাস্তা হাটের সম্পত্তি পরিফেরিভুক্ত করে ভূমি অফিস। পরে কর্তৃপক্ষ বাজারের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য ২০০৯ সালে এলজিআরডি মন্ত্রালয়ে পত্র প্রেরণ করে। এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রনালয় পরে-২/বিবিধ-স্খায়ী কমিটি-৭/২০০৯/১৩২৯ তারিখ ২০/১০/০৯ স্বারকে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসককে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মন্ত্রালয়ের নির্দেশে বাস্তবায়নের জন্য পীরগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ ২৪/১১/০৯ ইং তারিখ ৭৬৩ নম্বর স্মারক এবং ৩১/০৭/১৩ তারিখ ২০১৩/৪৮৬ নম্বর স্মারক জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। তবে অজ্ঞাত কারনে সে সময় জেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই সুযাগে পরে শহরের প্রানকেদ্র রঘুনাথপুর মৌজায় (ঢাকাইয়াপট্টি) পরিফেরি ভুক্ত চৌরাস্তা হাটের উত্তর পূর্বাংশ অবৈধ ভাবে পাকা স্থাপনার কাজ শুরু করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লবসহ কতিপয় ব্যক্তি।

শত কোটি টাকা মূল্যের হাটের জমিতে তারা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ভিত্তি স্থাপনসহ আরসিসি পিলার নির্মানের কাজ করেছেন। বিপ্লব নিজের বাড়ির জন্য বহুতল ভবন এবং ইমদাদুল হক জমি দখল নিতে তার লোকজন দিয়ে সীমানা প্রাচীরর কাজ করেছেন উক্ত জমির উপর।

বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজর আসলে দখল ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বুধবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিমকে নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক মাববুবুর রহমান। তবে নিদের্শনা পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার লোকজন ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ না করে দখলদারদের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে চলে যান।

পরে জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে জানিয়েছেন, নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ বহস্পতিবার (১৪ অক্টাবর) দেখা যায় যথারীতি কাজ চলছে। অভিযাগ উঠেছে, হাটের ওই সরকারি জমি দখলদারদের পাইয়ে দিত নেপথ্যে কাজ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম।

এ প্রসঙ্গে উপজলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম জানান, তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ঠিক নয়। কাজ বন্ধ করা হয়েছে। আবার কাজ চালুর বিষয়টি তিনি জানেন না। এখনই ঘটনাস্থলে যাবেন বলে জানান তিনি।স্থাপনা নির্মান প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক বলেন, এক সময় এই বাজারটা মারোয়ারীর সম্পত্তি ছিলো। পরে এটাকে হাটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অনেকেই দখল করে আছেন। বড় বড় বিল্ডিং করেছেন। আমি কোনো জমি দখল করিনি।

তিনি জানান, তার জানা মতে অন্য এক এমদাদুল সেখানে জমি কিনে নিয়ে এখন প্রাচীর করেছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব জানান, সেখানে বিশ বছর ধরে আধা পাকা বাড়ি করে আছেন তিনি। এখন ভেঙ্গে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। হাটের পরিফেরি থেকে জায়গাটা অবমুক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে।

এদিকে পৌরসভা দপ্তর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পৌরসভা থেকে বার্ষিক ইজারা প্রদান করা হয় বাজারটি। এর পর আর তা সম্ভব হয়নি। ভূমি অফিসের লোকজনের সহায়তায় সেখান রাতা রাতি অবৈধ ভাবে আধা পাকা বাসা বাড়ি, পাকা ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে কতিপয় ব্যক্তি। হাটের জায়গায় ব্যক্তি মালিকানায় অবৈধ বিল্ডিং নির্মান ও বাসা বাড়ি গড়ে উঠায় পরে কতৃপক্ষ তা বাজার হিসেবে ইজারা দিতে চাইলেও প্রভাবশালী দখলদারদের ভয়ে কেউ লিজ নিতে রাজি হয়নি।

পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ইকরামুল হক বলন,পরিফেরি ভুক্ত জমিতে ঘর নির্মানের পারমিশন পৌরসভা দিতে পারে না। কাজ বন্ধ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলছি।

মঈনুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়