ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

লঞ্চে আগুন: নিখোঁজের সঠিক তথ্য নেই কারো কাছে

ঝালকাঠি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ২৩:৪০, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
লঞ্চে আগুন: নিখোঁজের সঠিক তথ্য নেই কারো কাছে

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে কতজন নিখোঁজ তার সঠিক হিসেব নেই কারো কাছে। দুর্ঘটনার পর শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সুগন্ধা তীরের দিয়াকুল গ্রামে, ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসতে শুরু করেন নিখোঁজদের স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে সুগন্ধা নদী তীর এবং হাসপাতালগুলোর পরিবেশ। এ সময় তাদের অনেকের হাতেই নিখোঁজ স্বজনদের ছবি দেখা যায়।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নাজমুল আলম জানান, ৩৭ জনের মরদেহ ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৩৩ জনের স্বজনদের সন্ধান চলছে। অগ্নিদগ্ধে মরদেহগুলোর চেহারার কোন আকৃতি বুঝা যাচ্ছে না। এছাড়াও সুগন্ধ নদীতে নিখোঁজদের সন্ধানে একাধিক টিম উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।’

লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজের বিষয়ে জেলা পুলিশ ৪৭ জন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ঝালকাঠি ইউনিটের পক্ষ থেকে ৫১ জনের  তালিকা করা হয়েছে। নিখোঁজদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তালিকা করা  হয়েছে। 

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯ টার দিকে বলেন, ‘স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিখোঁজদের তালিকা করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ঝালকাঠি জেলা ইউনিটের আজীবন সদস্য শাকিল হাওলাদার রনি বলেন, ‘লঞ্চ দুর্ঘটনার পর শুক্রবার সকাল থেকেই আমাদের কাছে নিখোঁজদের স্বজনরা আসতে থাকেন। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা তালিকাটিতে তৈরি করেছি।’

স্বজনদের খোঁজে আসা বাবুল নামে এক ব্যক্তি জানান, তার ভাইর মেয়ে সোনিয়া (২৫), সোনিয়ার দুই ছেলে জুবায়ের (৬) ও জুনায়েদ (২) এবং তার মা রেখা বেগম দুর্ঘটনা কবলিত ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে করে বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগি গ্রামে যাচ্ছিলেন। লঞ্চে আগুন লাগার পরপরই সোনিয়া তার ছয় বছরের শিশু জুবায়েরকে নিয়ে নদীতে লাফ দেন এবং সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু সোনিয়ার দুই বছরের ছেলে জুনায়েদ ও তার মা রেখা বেগমকে এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

বাবুল বলেন, ‘মোর মা আর নাতিডারে পাই না। ওগো কোমমে পামু হ্যাও মুই জানিনা। আল্লাহ মোর মায়েরে আর নাতিডারে ফিরাইয়া দ্যাও।’

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চটিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী শুক্রবার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। র‌্যাব, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও অনেকে। তবে কতজন নিঁখোজ আছে তার সঠিক তথ্য নেই কারো কাছে।

অলোক/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়