ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

খুলনায় সমাবেশকে ঘিরে আতঙ্কে যশোর বিএনপির নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ২১ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ২৩:০০, ২১ অক্টোবর ২০২২
খুলনায় সমাবেশকে ঘিরে আতঙ্কে যশোর বিএনপির নেতারা

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা বাস যশোরে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।

খুলনায় মহাসমাবেশকে ঘিরে যশোর বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে মামলার ভয়ও। এদিকে, যশোর থেকে সব রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও খুলনাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তাদের অনেককেই বিকল্প উপায়ে বাড়তি ভাড়া দিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে দেখা গেছে। অনেককে ট্রেন স্টেশনেও ভিড় করতে দেখা গেছে।

যশোর থেকে  দূরপাল্লাসহ সব রুটেই যাত্রীবাহী ও অন্যান্য ছোট-বড় যানবাহন সময় মেনে ছেড়ে যাচ্ছে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। তবে খুলনায় পরিবহন ধর্মঘটের কারণে কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী বাস যশোর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত চলাচল করছে। আর এতে খুলনাগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। 

বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, আগামীকাল শনিবার (২২ অক্টোবর) খুলনায় বিএনপির মহাসমাবেশ। দলটির টার্গেট যশোর থেকে অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী পাশের জেলার এ সমাবেশে যোগ দেবেন। এজন্য যশোরের বিভিন্ন হাট-বাজারে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, মহাসমাবেশ বাঁধাগ্রস্ত করতে অপকৌশল নিয়েছে সরকার। তারা দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ দিয়ে অভিযান চালাচ্ছে। গত তিন দিনে অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বিএনপির সমাবেশ বানচাল করতে এই পরিবহন বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

খুলনা থেকে যশোর এসে বিপদে পড়েছেন আরিফ বিল্লাহ। যশোরে আত্মীয় বাড়ি এসে ফিরে যেতে ভোগান্তিতে পড়েন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাকে যেভাবেই হোক বাড়ি পৌঁছাতে হবে।’

খুলনাগামী যাত্রী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্মঘট ডাকা মানেই আমাদের দুর্ভোগ। বাস মালিক সমিতি কিংবা রাজনৈতিক দল হোক বা সংগঠনই হোক তারা ধর্মঘট ডেকে বসে থাকে। তারা কিন্তু আমাদের কথা ভাবে না। এভাবে তো সব চলতে পারে না।’

পরিবহনের চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের জন্য ধর্মঘটের কারণে যশোর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত আসতে পারছে কুষ্টিয়ার পরিবহনগুলো। এরপর আর কেউই যেতে পারছে না।’

যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘আমরা খুলনার সমাবেশে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে যেতে প্রস্তুতি নিয়েছি। মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে নেতাকর্মীদের আটক করেছে। কিন্তু এতে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে না।’

তিনি বলেন, ‘গণসমাবেশ বানচাল করতে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা চলছে।’ 

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘একটা দলের বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে নানা ধরণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রস্তুতিসভা করতে দিচ্ছে না। পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। আবার বিএনপির কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসাইন বলেন, ‘পুলিশ পরিকল্পিতভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। যাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর বা অন্যান্য মামলা রয়েছে তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

রিটন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়