ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘কোনো ধর্মাবলম্বীরা যেন বৈষম্যের শিকার না হয়’ 

রাঙামাটি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ১৩ নভেম্বর ২০২২  
‘কোনো ধর্মাবলম্বীরা যেন বৈষম্যের শিকার না হয়’ 

দেশের সকলকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধে মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ ছিল না। সবাই এক কাতারে থেকে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশে কোনো ধর্ম্বাবলম্বীরা যেন বৈষম্যের শিকার না হয়, সেদিকে সকলকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত শারদীয় দুর্গাপুজার বিজয়া পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

সভায় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চান এখানে যত ধর্মাবলম্বী আছে, তারা যেন বিনা বাধায় স্বাধীনভাবে নির্বিঘ্নে পূজা-অর্চনা করতে পারে। সমস্ত ধর্মের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষ হওয়া। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত আমরা এখনও মানুষ হতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী চান স্বাধীন বাংলাদেশে বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে।’

সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী জাতিরজনক শেখ মুজিবকে হত্যার মাধ্যমে এখানে সাম্প্রদায়িক শক্তির বীজ বপন করা হয়েছে বলেই ২০০-২০০১ সালে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকদের অতিরিক্ত মাত্রায় অত্যাচারিত ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। আপনারা সনাতনী সমাজ একত্রিত হতে পেরেছেন, এর জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাই। আমার আহ্বান থাকবে আপনাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী বলেন, ‘২০০১ সালে জামায়াত-বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসে, তখন সারা দেশের চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নৌকা মার্কায় সব ধর্মের-বর্ণের মানুষ ভোট দিয়েছে। কিন্তু সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজনের নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার অপরাধে অন্যান্য ধর্মের লোকজনের চেয়ে নির্যাতনের পরিমাণ বেশি ছিল। এটা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল।’ 

অং সুই প্রু চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা নিজেদের মধ্যে যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকেন; যদি বিভেদ, দূরত্ব থাকে; তাহলে শত্রু সহজে আপনার সমাজ, ধর্ম, বর্ণের মধ্যে ঢুকে নানা ষড়যন্ত্রের সুযোগ নেবে। সেটা সকলকে উপলব্ধি করতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে থাকি, তাহলে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আঘাত করার আগে চিন্তাভাবনা করবে। সুতরাং আঘাত করলে প্রতিরোধ করার মতো সক্ষমতাও আমাদের থাকতে হবে।’  

পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী বলেন, ‘আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলে এ দেশের নাগরিক। এখানে পার্থক্য করার সুযোগ নেই।’

পূজা উদযাপন পরিষদ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক অমলেন্দু হাওলাদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। সম্মানিত অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর, রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী।

সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলার প্রত্যেক উপজেলার বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 
 

বিজয়/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়