ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস পালিত 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫২, ৩ ডিসেম্বর ২০২২  
কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস পালিত 

আজ ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদার মুক্ত হয়েছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা। প্রায় ৫০০ পাক সেনাকে পরাস্থ করে কোটালীপাড়াকে শত্রুমুক্ত করেছিল হেমায়েত বাহিনী। 

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পাঠাগারের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরা কোটালীপাড়ায় খুবই শক্ত অবস্থানে ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষক হেমায়েত উদ্দিন (বীর বিক্রম) পালিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং নিজের একটি বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে কয়েকটি অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল কয়েকটি বাহিনী। তারমধ্যে অন্যতম ছিল হেমায়েত বাহিনী। ৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে গড়ে তোলা হয় এ বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোটালীপড়ায় একটি ট্রেনিং ক্যাম্পও গড়ে তোলেন হেমায়েত উদ্দিন। যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরকেও যুদ্ধের ট্রেনিং দেওয়া হতো।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ন হয় হেমায়েত বাহিনী। ৭২টি গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত এই হেমায়েত বাহিনী যুদ্ধ করেছিল রণাঙ্গনে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য যুদ্ধগুলো হলো- হরিনাহাটি, মাটিভাঙ্গা, বাঁশবাড়িয়া, ঝনঝনিয়া, জহরের কান্দি, কোটালীপাড়া সদর প্রভৃতি। 

পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ২৪জন আহত হন। নিহত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- কোটালীপাড়া উপজেলার গোলাম আলী, বেলায়েত, আবুতালেব, আবুল খায়ের, মোক্তার হোসেন, রতন কুমার, মোয়াজ্জেম হোসেন, টুঙ্গীপাড়া উপজেলার বেলায়েত হোসেন, মুকসুদপুর উপজেলার আবুল বাশার, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ছাত্তার মৃধা, সেকেন্দার, নুরু বেপারী, পরিমল শীল, আগৈলঝাড়া উপজেলার তৈয়াবালী, নলসিটি উপজেলার ওসমান, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার মকবুল হোসেন, আ. ছাত্তার এবং ঢাকার ইব্রাহিম। 

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হেমায়েত বাহিনীর সদস্যরা ১৩৪টি অপারেশন পরিচালনা করেন। এর মধ্যে রামশীলের যুদ্ধ অন্যতম। এই যুদ্ধটি অত্র অঞ্চলে ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধ বলে পরিচিত। হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধে মারত্মকভাবে আহত হন। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের কারণে দেশ স্বাধীন হবার পর হেমায়েত উদ্দিনকে “বীর বিক্রম” খেতাবে ভুষিত করা হয়।

দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলার একটি রেস্টুরেন্টের হল রুমে সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পৌর মেয়র হাজী মো. কামাল হোসেন শেখ, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আতিয়ার রহমান, আবুল কালাম আজাদ, সুধারঞ্জন রায়, সহদেব বৈদ্য, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক পলাশ সরদার বক্তব্য রাখেন।

বাদল সাহা/ মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়