ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

লক্ষ্মীপুর মুক্তদিবস আজ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ৪ ডিসেম্বর ২০২২  
লক্ষ্মীপুর মুক্তদিবস আজ

লক্ষ্মীপুর হানাদার মুক্তদিবস আজ। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াইয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দখল থেকে লক্ষ্মীপুর শত্রু মুক্ত হয়। 

৯ মাস মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে রামগতি, রায়পুর, রামগঞ্জ ও কমলনগর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বিভিন্নস্থানে অর্ধ-শতাধিক খণ্ড যুদ্ধ হয়। এর মধ্যে রামগঞ্জ-মীরগঞ্জ সড়কে ১৭ বার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। 

জানা গেছে, যুদ্ধে লক্ষ্মীপুর জেলায় ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক লোক শহীদ হয়েছেন। সদর উপজেলায় ২৩ জন, রামগতিতে ২ জন, কমলনগর ১ জন, রায়পুরে ৭ জন ও রামগঞ্জে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও পাকিস্তানি বাহিনীর শতাধিক সৈন্য এবং পাঁচ শতাধিক রাজাকার নিহত হয়। এর মধ্যে বাগবাড়ি মাদাম ব্রিজের পাশে ৭০ জন পাকিস্তানি সেনা যুদ্ধে মারা যায়। এপ্রিলের শেষ দিকে হানাদার বাহিনী প্রথম লক্ষ্মীপুরে ঢোকে। মুক্তিযোদ্ধারা খবর পেয়ে মাদাম ব্রিজটি ভেঙে দেয়। হানাদার বাহিনী শহরে ঢুকতে না পেরে মাদাম ব্রিজের নিচ দিয়ে নৌকায় বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মাস্টার রফিকুল হায়দার চৌধুরী ও অধ্যক্ষ মুনসুরুল হকের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। তাদের কাছে ছিল ৫টি রাইফেল ও ৫টি গ্রেনেড। এরপর ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এফএফওবিএলএফ সদস্য আ ও ম শফিক উল্যা, তোফায়েল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, হামদে রাব্বী, ফিরোজ আলমসহ কয়েকজন মাস্টার রফিকের সঙ্গে যোগ দেন। এরপর জেলার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণজয়ী যুদ্ধ শুরু করেন।

মে মাসের শেষ দিকে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধের পর লুধূয়া গ্রামের একটি পুকুরের কচুরিপানার ভেতরে ফেলে যাওয়া ১টি রকেট লাঞ্চার, ৭টি চাইনিজ রাইফেল, ১টি এলএমজি, ৭ হাজার গুলি উদ্ধার করা হয়। এ অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুদের বিরুদ্ধে আরও শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

৯ মাসে যুদ্ধকালীন পাকিস্তানি সেনারা বাগবাড়ির একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে টর্চারসেলে অসংখ্য নারী পুরুষকে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। এসব লাশ পাশের বাগবাড়ি গণকবরে পুতে রাখে। সবশেষে ৪ ডিসেম্বর শহরের বাগবাড়ির পশ্চিম দিক থেকে হাবিলদার আবদুল মতিন ও উত্তর দিক থেকে রফিক স্যারের নেতৃত্বে যুদ্ধ হলে এ সময় শতাধিক রাজাকার আত্মসমর্পণ করে, লক্ষ্মীপুর হয় শত্রু মুক্ত।

জাহাঙ্গীর লিটন/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়