ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরে জাহাজ ভিড়ছে না, কর্মহীন ৫ শতাধিক শ্রমিক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ১০ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ২২:০৪, ১০ ডিসেম্বর ২০২২
বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরে জাহাজ ভিড়ছে না, কর্মহীন ৫ শতাধিক শ্রমিক

পদ্মা-মেঘনা ও যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে পানি কমে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরে চট্টগ্রাম ও মংলা নৌ-রুটের পণ্যবাহী বড় জাহাজ ভিড়তে পারছে না। এতে এ সব রুটে জ্বালানি তেলবাহী কার্গো, সার, কয়লা, পাথর ও সিমেন্টের জাহাজগুলো বন্দরে যেতে পারছে না। এতে বন্দর জাহাজশূন্য হওয়ায় কর্মরত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।

বাঘাবাড়ি ঘাটে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে না পেরে সেই জাহাজগুলো নগরবাড়ি ও পাটুরিয়া নৌবন্দরের অদূরে লাইটারেজের মাধ্যমে অর্ধেক মাল আনলোড করে পাবনার বেড়া, নগরবাড়ি ও যশোরের নওয়াপাড়া ঘাটে খালাস করছে মালামাল।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, বড় জাহাজ চলাচলের জন্য ১২-১৫ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন হলেও বর্তমানে বড়াল নদীতে পানি আছে ৬-৮ ফুট। পানি কম থাকায় প্রায় ১৫ দিন ধরে জাহাজগুলো বন্দরে ভিড়তে না পারায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে।

বাঘাবাড়ি নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, নদীর পানি কমে যাওয়ায় মোল্লার চর, ব্যাটারির চর, পাটুরিয়া, নিকলি ও চর-নাকালিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ডুবোচর জেগে উঠেছে। ফলে পূর্ণলোডে পণ্যবাহী জাহাজগুলো বন্দরে আসা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে জাহাজের মাল বন্দরের অদুরে খালাস করতে বাধ্য হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত নদী ড্রেজিং করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নৌ-বন্দর শ্রমিক এজেন্ট আবুল সরকার বলেন, ‘কোটি টাকা দিয়ে বাঘাবাড়ি ঘাট ইজারা নিয়েছি। নদীতে পানি কম থাকায় দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় জাহাজ আটকে যাওয়ায় লাইটারেজ জাহাজ ও কার্গোতে করে বন্দরে পণ্য আনতে হচ্ছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার সার, তেল, চাল, গমসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসা হয় এই বন্দর দিয়ে। এ ছাড়া যমুনা, পদ্মা, মেঘনার তিনটি জ্বালানি তেলের ডিপোও রয়েছে এই বাঘাবাড়ি বন্দরে। বন্দরে জাহাজ ভিড়তে না পারায় ৫ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।’

বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরের শ্রমিক আশরাফ, হোসেন, শুক্কুর আলী, মিন হাজুল ইসলাম, বেলাল হোসেন বলেন, গত ৩৫ বছরেও এই বাঘাবাড়ি বন্দর জাহাজশূন্য হয়নি। প্রতিদিন কাজ করে সংসার চলাতে হয়। কিন্তু কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

বাঘাবাড়ি বন্দরের বাফার গুদামের কর্মকর্তা হারুন আর রশিদ বলেন, উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার ১৪ বাফার গুদামে ইরি-বোরো আবাদের জন্য আপদকালীন সার মজুত রয়েছে। ফলে এ সমস্যায় সার সংকটের আশঙ্কা নেই।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, এটা দ্বিতীয় শ্রেণির নৌ-বন্দর। নিয়ম অনুযায়ী এ বন্দরের চ্যানেলে ৭ থেকে ৮ ফুট ড্রাফটের জাহাজ চলার কথা। কিন্ত সেখানে ১০-১২ ফুট ড্রাফটের জাহাজ চলাচল করলে সমস্যা হবেই। বন্দরটিকে প্রথম শ্রেণিতে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে। এটি হলেই এ সমস্যা আর থাকবে না বলে তিনি জানান।

রাসেল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ