কিশোরগঞ্জে বিজয় নিশান উড়েছিলো ১৭ ডিসেম্বর
রুমন চক্রবর্তী, কিশোরগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম
আজ ১৭ ডিসেম্বর। কিশোরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। যেখানে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ জায়গা পাকশত্রু মুক্ত হয়, সেখানে কিশোরগঞ্জে ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে বিজয় নিশান উড়েছিল ১৭ ডিসেম্বর। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্ত হয় কিশোরগঞ্জ।
১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে স্বজন হারানোর ব্যথা ভুলে হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতা রাস্তায় নেমে আসেন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান তুলে মুক্তির সেই আনন্দে শামিল হন তারা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, কিশোরগঞ্জে ১৬ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত পাক বাহিনীর দোসরদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড লড়াই হয়েছে, রক্ত ঝরেছে।
বাংলার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের জন্মভূমি এই কিশোরগঞ্জ। বীর প্রতীক সেতারা বেগম, বীর প্রতীক কর্ণেল হায়দার, বীর প্রতীক নূরুল ইসলাম খান পাঠানের বাড়িও এই কিশোরগঞ্জে।
১৬ ডিসেম্বর সারারাত মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি আক্রমণ ও গোলাগুলিতে বিনিদ্র রাত কাটায় শহর ও শহরতলির লোকজন। ১৭ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনী হানাদারদের হটিয়ে মুক্ত করে কিশোরগঞ্জকে। ওই দিন সকাল ৯টার দিকে শহরের পূর্ব দিক দিয়ে কমান্ডার কবীর উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। এর পরপরই অন্য প্রবেশ পথ দিয়েও মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে প্রবেশ করতে শুরু করেন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমান্ডার ভূপাল নন্দী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘১৭ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় কমান্ডার কবীর উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল শহরের পূর্ব দিক দিয়ে বিজয় ধ্বনিতে কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। তারপর শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথ দিয়েও মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে আসতে থাকেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযানের খবরে মুক্তিকামী জনতাও উল্লাস করে স্বাধীনতার স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। সামান্য প্রতিরোধের পরই পাকবাহিনীর দোসররা আত্মসমর্পন করে। শহরের শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করে পাক বাহিনীর দোসররা।
মাসুদ
আরো পড়ুন