ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বই না পেয়ে ফিরে গেছে রুপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুর সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪০, ২ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ২১:৫৪, ২ জানুয়ারি ২০২৩
বই না পেয়ে ফিরে গেছে রুপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ রাখায় বই উৎসবের দ্বিতীয় দিন ভর্তি হতে ও বই নিতে আসা অনেক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ফেরত যেতে দেখা গেছে।

এদিকে সেশন ফি, ভর্তি ফিসহ ৭০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সরকারি বন্ধ না থাকলেও স্কুল বন্ধ করে স্কুলের তালার চাবি নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক।

সোমবার (২ জানুয়ারী) বই উৎসবের দ্বিতীয় দিন দুপুর ১২টার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাহিদ ও বিদ্যালয়ের সভাপতি কায়ূম মোল্যাকে বিদ্যালয়ের মাঠে ও বাহিরে ঘুরতে দেখা যায়।

বই নিতে ও ভর্তি হতে আসা ৮ম শ্রেণীর জান্নাতুল, সাদিয়া, বলেন, ‘বই উৎসবের প্রথম দিন ৫টি বই পেয়েছি। আজ সোমবার স্কুলে এসে দেখি স্কুলের অফিস-সহ সকল রুম তালা দেওয়া।’ ৮ম শ্রেণীর মিম বলেন, ‘আমাকে শুধু বিজ্ঞান বই দিয়েছে।’ 

কদমী গ্রামের নাগর মিয়া বলেন, তার ছেলে হামিম মিয়াকে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার জন্য এসেছে, শিক্ষকরা না থাকায় ভর্তি না করে বই না নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।

ডহরনগর গ্রামের মোরশেদা বেগম বলেন, ‘আমার জমজ দুই ছেলে রাজু মিয়া ও রবি মিয়া এ বছর ৮ম শ্রেণী থেকে পাস করে ৯ম শ্রেণীতে উঠেছে। তাদের দুই ভাইকে ৯ শ্রেণীতে ভর্তি ও বই নিতে এসেছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বলেছেন ভর্তি ও সেশন ফিসহ ৭০০ টাকা লাগবে। টাকা না দিলে ভর্তি হতে পারবে না।’

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাহিদ বলেন, ‘বই উৎসবের প্রথম দিন রোববার (১ জানুয়ারি) সকালে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা সকালে স্কুলে এসে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বই দিয়ে স্কুল থেকে চলে যান। পরে সভাপতি সকলকে সঙ্গে নিয়ে কিছু বই দিয়েছেন। বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক সকল রুম তালা দিয়ে রেখে চলে যায়। যার কারণে আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে বই দিতে পারছি না।’ 

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কায়ূম মোল্যা বলেন, ‘বই উৎসবের প্রথম দিন বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক সকালে স্কুলে এসে কিছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে বই দিয়েছে। জানতে পেরে সকল শিক্ষার্থীকে টাকা দিতে নিষেধ করি। পরে প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা স্কুল থেকে চলে যায়। আমি সকলকে সঙ্গে নিয়ে কিছু শিক্ষার্থীকে বই দেই।’  

সভাপতি বলেন, এ বছর সেশন ফিসহ কোনো কিছুই নির্ধারণ করা হয়নি। তাছাড়া গত অক্টোবর ৩০ তারিখে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মোল্যাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক মো. শাহাজাহান মোল্যা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি সরকারি কাজে ঢাকায় আছি। বই উৎসবের দিন শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া হয়েছে।’

টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে না, শুধু ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে যারা ভর্তি হতে আসছে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে অবৈধভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।’ 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্কুল বন্ধ রাখায় অনেক ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে এসে ফিরে যাচ্ছে খবর পেয়েছি। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) স্কুলে গিয়ে সব কিছু শুনে উপরে রিপোর্ট দেওয়া হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, ‘এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কোনো শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 
 

নিরব/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়