ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নকশা জটিলতায় বন্ধ রয়েছে সেতুর নির্মাণ কাজ 

পিরোজপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩  
নকশা জটিলতায় বন্ধ রয়েছে সেতুর নির্মাণ কাজ 

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নকশা জটিলতার কারণে  দুই বছরের বেশি সময় ধরে একটি সেতুর  নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। উপজেলার নলী জয়নগর গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী বরগুনার পাথরঘাটার নাচনাপাড়া রশিদিয়া বন্দর বাজার সংলগ্ন হলতা নদীতে নির্মাণাধীন ওই সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় দুই উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষজন যাতায়াতের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী জয়নগর গ্রামের হলতা নদীর ওপর ৩৯ মিটার দৈর্ঘের গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ পায় পিরোজপুরের আবির এন্ড সর্দার (জেবি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। সেতুটি নির্মাণ কাজের মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। ২০২০ সালের শেষ দিকে সেতুটির নির্মাণ কাজ ৩৫ ভাগ শেষ হয়। কিন্তু গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে সেতুর বাকি নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।

আবির এন্ড সর্দার (জেবি) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আহসান হাফিজ বলেন, সেতুর দুই পাশের পাইলের কাজ শেষ। এরপর নদীর মধ্যে পায়ার (খুঁটি) নির্মাণ করতে গিয়ে দেখি পায়ার তৈরির জন্য স্থায়ী কেজিং  (পায়ারের চারপাশে লোহার পাইপের বেষ্টনী) দরপত্রে ধরা হয়নি। এ কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ ফেলে রেখে এলজিইডি পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে স্থায়ী কেজিংয়ের টাকা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য আবেদন করি। টাকা বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করবো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়ন বলেশ্বর নদ থেকে শুরু হয়ে হলতা নদী মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে। হলতা নদীর দুই তীর ভরাট হয়ে নদী সরু হয়ে গেছে। নাচনাপাড়া রশিদিয়া বন্দর বাজার সংলগ্ন সেতু কাজ শুরু হয়ে থেমে আছে। নদীর দুই তীরে শুধু সেতুর পাইলের কাজ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন সেতুর পাশে সাঁকো তৈরি করে মানুষ  চলাচল করছেন।

উপজেলার নলী জয়নগর গ্রামের জহিরুল ইসলাম জানান, আমাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের কৃষকরা কৃষিপণ্য নিয়ে হলতা নদীর সেতুটি পার হয়ে নাচনাপাড়া বাজারে যাতায়াত করতেন। এছাড়া নাচনাপাড়া বাজারে প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার গরু ছাগলের হাট বসে। পুরানো সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় কৃষক ও গরু ব্যবসায়ীদের অনেক পথ ঘুরে বাজারে যেতে হচ্ছে। দীর্ঘ দুই বছর ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় গ্রামবাসীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অটোরিকশা চালক মিজান মিয়া জানান, মঠবাড়িয়ার সাপলেজা, নলী, নলী জয়নগরসহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ নাচনাপাড়া বাজার, কাকচিড়া লঞ্চঘাট, পাথরঘাটা ও বরগুনায় যাওয়া আসা করেন। এখন সেতু না থাকায় সাঁকো পার হতে হয়। সাঁকো দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না।

মঠবাড়িয়ার নলী গ্রামের মোটরসাইকেল চালক ইমাজ উদ্দিন বলেন, আমরা ভাড়া নিয়ে সেতু পার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় যেতাম। নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য পুরানো সেতুটি ভেঙে ফেলার পর তিন বছর ধরে ভোগান্তিতে রয়েছি। ভাড়া নিয়ে ওপরে (পাথরঘাটার নাচনাপাড়া) যেতে পারছি না। যাত্রীদের সেতুর কাছে নেমে নদী পার হয়ে অন্য গাড়ি করে গন্তব্যে যেতে হয়।

এলজিইডি মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলী জিয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারি ও অর্থাভাবে সেতুটির কাজ নিদিষ্ট সময়ে শেষ করা যায়নি। এরপর দেখা গেল নদীর মধ্যে পায়ার তৈরির জন্য স্থায়ী কেজিং আইটেম দরপত্রে ধরা হয়নি। এসব কারণে সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা স্থায়ী কেজিং এর জন্য পুনরায় নকশা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি  দিয়েছি। নকশা অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।

তাওহিদুল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়