ইঁদুর দমনে সারি পদ্ধতিতে গম চাষে আগ্রহী কৃষকরা

দেশের উত্তরের জনপদ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আধুনিক পদ্ধতিতে গম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা৷ এতে পরিচর্যা কীটনাশক, সার প্রয়োগ ও ইঁদুর দমন সহজ হওয়ায় ক্রমেই বেড়ে চলেছে এই সারি পদ্ধতিতে গম চাষ। এই পদ্ধতিতে ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন তারা। 

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মাঠে গম ক্ষেতের সবুজের বিপ্লব। গমের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। ভালো ফলনের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রতিনিয়ত পরামর্শ প্রদান করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১৭ ইউনিয়নের মধ্যে কমবেশি সব ইউনিয়নের গমচাষ হলেও কাটাবাড়ী, রাজাহার, শাখাহার, মহিমাগঞ্জ, শালমারা, শিবপুর ইউনিয়নে গমের আবাদ বেশি হচ্ছে। আগে এই এলাকার কৃষকরা জমিতে ছিটিয়ে গম চাষ করতেন। এতে ফসল পরিচর্যায় নানা ধরণের সমস্যা হতো। গেল বছর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে এলাকার কৃষকরা সারি পদ্ধতিতে গম চাষ করেন। এতে ভালো সুফল পাওয়ায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে গম চাষাবাদ করেছেন।

উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের বেতারা গ্রামের কৃষক রাজা মিয়া বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে সারি পদ্ধতিতে গম চাষ করেছি। সনাতন পদ্ধতিতে জমিতে ছিটিয়ে আবাদ করার চেয়ে সারি পদ্ধতিতে চাষ করলে ফলন বেশি হয়। বিঘা প্রতি ২-৩ মণ গম বেশি পাওয়া যায়।’

একই গ্রামের কৃষক আফতাবুল ইসলাম বলেন, ‘সারি পদ্ধতিতে চাষ করলে জমিতে সার প্রয়োগ, কীটনাশক ও ফসল পরিচর্যা সহজ হয়। এ পদ্ধতির কারণে গমের মধ্যে সহজে আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে। যে করণে গাছ বেশ সতেজ ও শক্তিশালী হয়। ফলনও বেশি হয়।’

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৮৩০ হেক্টর জমিতে সারি পদ্ধতিতে গম চাষ করেছেন কৃষকরা। প্রথমের দিকে তারা সারি পদ্ধতিতে গম চাষে আগ্রহী না হলেও সুফল পাওয়ায় এখন ক্রমেই আগ্রহী হচ্ছেন। ফলন বাড়াতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বক্ষণিক সারি পদ্ধতির গম চাষে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’