ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়ে মুক্তি পেলেন ২ শিক্ষক

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ২০:০০, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়ে মুক্তি পেলেন ২ শিক্ষক

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া বৌরতলা দাখিল মাদ্রাসায় কেকের বদলে পাউরুটি কেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছিলেন শিক্ষকেরা। ২০২১ সালের ১৭ মার্চের এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তা দেখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছিলেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।

এতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন দুই শিক্ষক। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলার ৯ আসামির মধ্যে তিনি মাদ্রাসা সুপার আব্দুস সালাম (৫৫) ও সহকারী শিক্ষক গোলাম কবিরকে (৪৮) দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। তবে তাদের কারাগারে না পাঠিয়ে পাঁচটি শর্তে প্রবেশন দেওয়া হয়েছিল।

শর্ত লঙ্ঘন করলেই তাদের এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন আদালত। তবে আদালতের দেওয়া শর্ত অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন দুই শিক্ষক। অবশেষে প্রবেশন কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তারা মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার এক আদেশে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান তাদের মুক্তি দেন।

এ দুই শিক্ষকের জনপ্রবেশনের শর্ত ছিল- তারা কোনো প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়িত হবেন না বা একই ধরনের অপরাধ করবেন না। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের ইতিহাস সম্পর্কে নিজেরা পড়বেন এবং সহকর্মী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জানাবেন। আদালত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন। 

প্রবেশনকালীন জাতির পিতার নিজ হাতে লেখা তিনটি বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ পড়বেন। এছাড়া জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ এবং রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা ‘একাত্তরের চিঠি’ বইগুলো পড়বেন। এছাড়া আসামিদের ১০টি করে ফলদ ও বনজ বৃক্ষের চারা রোপণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, আসামিদের প্রবেশনের শর্ত মানার বিষয়টি তদারকি করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা। তিনমাস পর পর তাদের শর্ত প্রতিপালন ও অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, প্রবেশনের এক বছর সময় শেষে আদালত সবগুলো প্রতিবেদন দেখেছেন। প্রতিবেদন সন্তোষজনক দেখে আদালত তাদের মুক্তি দিয়েছেন। তারা যথাযথভাবে শর্ত পালন করায় এই দণ্ড চাকরিসহ ভবিষ্যৎ জীবনে কোনোরূপ অযোগ্যতা বলে গণ্য হবে না বলেও জানান তিনি। 

কেয়া/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়