ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কুমিল্লায় ৩৫০ বছরের গাজীপুরের মেলা চলছে

কুমিল্লা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
কুমিল্লায় ৩৫০ বছরের গাজীপুরের মেলা চলছে

গাজীপুরের মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ‘কুস্তি খেলা।’

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার চলছে প্রায় ৩৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গাজীপুরের মেলা। আধ্যাত্মিক সাধক হযরত পীর শাহবাজ (রহ.) এর ওরশ উপলক্ষে গত শনিবার থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী গাজীপুরের মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ‘কুস্তি খেলা।’ যা মেলায় বেড়াতে বা ঘুরতে আসা প্রতিটি দর্শনার্থীকে মুগ্ধ করছে। এছাড়াও মেলায় বিভিন্ন ধরনের দেশি তৈজসপত্রের পাশাপাশি খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ফলে মেলা ঘিরে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে পুরো উপজেলায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গদেশে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর সফরসঙ্গী হিসেবে যে ৩৬০ আউলিয়া এসেছিলেন তাদের একজন হলেন হযরত পীর শাহবাজ (রহ.)। ধর্মপ্রচারের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির জ্ঞানদানে হযরত পীর শাহবাজ (রহ.) কুমিল্লা তিতাস উপজেলার গাজীপুরে বসবাস করতে শুরু করেন। সেখানেই তিনি জিন্দা গায়েব হন। গায়েব হওয়ার পর সেখানে গড়ে ওঠে তার মাজার। এছাড়াও কথিত আছে তার মাজার শরীফে কয়েকবার বাঘের আবির্ভাব ঘটেছিলো। বাঘের সঙ্গে তার ছিলো পরম বন্ধুত্ব।

প্রতিবছর ১৮, ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি হযরত পীর শাহবাজ (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে বাৎসরিক ওরশ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মুরিদ ও ভক্তরা এখানে জড়ো হন। মাজার সংলগ্ন গাজীপুর খান সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বসে মেলা। ঐতিহ্যবাহী পুরোনো এ মেলায় ঢল নামে লাখো মানুষের।

গতকাল রোবাবর বিকেলে সরেজমিনে মেলা প্রঙ্গন ঘুরে দেখা যায়, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ মেলায় আসছেন প্রিয়জনকে নিয়ে। তারা বাহারি খেলনা, প্রসাধনী, কাঠের আসবাবপত্র, বাঁশ ও বেতের সামগ্রী, জিলেপি, চুড়ি-গহনাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনছেন। এছাড়াও মেলায় শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে সার্কাস, নাগরদোলা ও জাদু প্রদর্শনী। মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো বাঙালির চিরচেনা কুস্তিখেলা। মেলার পাশে আলাদা মাঠে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত পর্যন্ত চলে এ কুস্তিখেলা।

তিতাস উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারহাদ আহমেদ ফকির বলেন, গাজীপুর মেলা চিরায়ত বাংলার লোক ঐতিহ্য আর প্রাণের মিলনমেলা। এই এলাকার মানুষের কাছে ঈদের চেয়েও বেশি আনন্দের এ মেলা। মেলা ঘিরে আশপাশের ৫০ গ্রামে বইছে উৎসবের আমেজ। বংশ পরম্পরায় এলাকার মানুষ ঐতিহ্যবাহী এ মেলা উদযাপন করে আসছেন। মেলায় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। সব ধর্ম বর্ণের মানুষ এ মেলায় অংশ গ্রহণ করছেন।

রুবেল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়