ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কেশবপুরে চাষ শূন্য থাকবে ৯৩৬ হেক্টর জমি 

সাকিরুল কবীর রিটন, যশোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১১:৩৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
কেশবপুরে চাষ শূন্য থাকবে ৯৩৬ হেক্টর জমি 

শ্রী নদীর নাব্যতা না থাকায় যশোরের কেশবপুর উপজেলার পূর্বাংশের বিল কালিচরনপুর, বিল খুকশিয়া, বিল বুড়ুলিয়াসহ ২০টি বিলের ৯৩৬ হেক্টর জমিতে এবারো বোরো ধানের আবাদ হবে না। অন্য বিলে কিছু কিছু অংশ আবাদ হলেও কালিচরনপুর বিলে গত ৫/৬ বছরের মতো এবারো এককাঠা জমিতেও বোরো ধান আবাদ করতে পারবেন না কৃষকরা। ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ‘এক ইঞ্চি জমি যেন পড়ে না থাকে’ সেটা যেমন কার্যকর হচ্ছে না, তেমনি জলাবদ্ধতার কারণে ফসল আবাদ করতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন কয়েক হাজার কৃষক।

সরেজমিন দেখা যায়, কেশবপুরের পূর্বাংশের ২০টি বিলের পানি শ্রী নদী দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। পলি জমে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় ৮০’র দশক থেকে কেশবপুরের বিশাল এলাকা জুড়ে থাকা ২০টি বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ২০০৫ সালে সরকার বিল খুকশিয়ায় টিআরএম (টাইটাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) চালু করে শ্রী নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনে এবং বিলগুলোতে ফসল ফলতে শুরু করেন কৃষকরা।

দুই বছর পর বিল খুকশিয়ায় বাঁধ দিয়ে মণিরামপুরের কপালিয়া বিলে টিআরএম চালু করার কথা ছিলো। কিন্তু ৬/৭ বছর পার হলেও কপালিয়া বিলে টিআরএম চালু না হওয়ায় খুকশিয়া বিলসহ অন্যান্য বিলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা টিআরএম প্রকল্পের কাটিং পয়েন্ট বেঁধে  দেয় ২০১৩ সালে। টিআরএম চালু না থাকায় শ্রী নদী নাব্যতা হারাতে থাকে এবং বিলগুলো আবারো জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে।  

খুকশিয়া বিলের কৃষক ময়নাপুর গ্রামের মহেন্দ্র মন্ডল জানান, গত ৯ বছর আমি বিলে কোনো ফসল ফলাতে পারিনি। আমার গ্রামের সবারই একই অবস্থা।

কালিচরনপুর গ্রামের মহিতোষ, কৃঞ্চপদ মল্লিক, গোবিন্দ, তপন, সাধনসহ অনেকেই জানান, টিআরএম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা ৬/৭ বছর ধরে বিলে কোনো ফসল চাষ করতে পারেন না। মাছের ঘেরে কাজ করে কোনো রকম তাদের সংসার চলে। এই গ্রামের অনেকেই জলাবদ্ধতার কারণে এলাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে চলে গেছে।

জলাবদ্ধ বিলগুলো হলো- বিল খুকশিয়া, নারায়নপুর বিল, কালিচরনপুর বিল, বড়–লি বিল, হাড়িয়াঘোপ বিল, কায়েমখোলা বিল, সারুটিয়া বিল, কৃঞ্চনগর বিল, ডহুরি বিল, বাগডাঙ্গা বিল, মনোহরনগর বিল, হদের বিল, গড়ভাঙ্গা বিল, গড়ালিয়া বিল, নোনাডাঙ্গা বিল, বলধালি বিল, আলতাপোল বিল, টেপুর বিল, ভায়না বিল ও আগরহাটি বিল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, সরকারি হিসেবে এই ২০টি বিলে মোট জমির পরিমাণ রয়েছে ৪ হাজার ৭৫৩ হেক্টর। এরমধ্যে বোরো আবাদ হবে ৩ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে। জলাবদ্ধতার জন্য ৯৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে না। এছাড়া বারোমাসি মাছের ঘের রয়েছে ১৯০ হেক্টর জমিতে। 

তবে কৃষদের দাবি, আরো বেশি পরিমাণ জমিতে এ মৌসুমে ধানের আবাদ হবে না। 

ঋতুরাজ সরকার জানান, নদীর তলদেশ উচু হয়ে যাওয়ায় বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কথা প্রতিটি মিটিং তোলা হয় তবে কোনো ব্যবস্থা হয়নি। গত বছর উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছিলো ১৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে। এবারও একই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। 

মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়