ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শেরপুরে নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না এলপি গ্যাস

তারিকুল ইসলাম, শেরপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১০, ৯ মার্চ ২০২৩  
শেরপুরে নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না এলপি গ্যাস

শেরপুরে সরকার নির্ধারিত নতুন দামে ভোক্তা পর্যায়ে তরালীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, তারা পরিবেশকদের কাছ থেকে বেশি দামে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার কিনছেন। ফলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) পক্ষ থেকে ১২ কেজির এক সিলিন্ডার এলপি গ্যাসের নতুন দাম ৭৬ টাকা কমিয়ে নির্ধারণের কথা জানানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতি ১২ কেজির এক সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৪৯৮ টাকা, যা এবার ৭৬ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪২২ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু শেরপুরে এই দামে সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে না।

সকালে শেরপুর কলেজ মোড় এলাকার গ্যাস পরিবেশক মেসার্স মনির এন্টারপ্রাইজে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে সিলিন্ডার। দোকান মালিক মনির হোসেন বলেন, ‘সরকারের দামের সঙ্গে তাদের ডিও মেলে না। সরকার নির্ধারিত দামের অনেক বেশি দিয়ে আমাদের কিনতে হয়। অথচ ভোক্তা অধিদপ্তর এসে আমাদের জরিমানা করে যায়। আর আগে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমরা এই ব্যাপারে কথা বলেছি। তিনি মন্ত্রণালয়ে কথা বলবেন বলে আমাদের আশস্ত করেছেন।’

শহরের স্কুল শিক্ষক, আব্দুল আলিমের সঙ্গে কথা হয় সিলিন্ডার গ্যাসের দোকানে। তিনি প্রতিবেদককে প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমরা কোথায় যাব বলেন? সেদিন পত্রিকায় দেখলাম গ্যাসের দাম কমেছে। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ শত ২২ টাকা। কিন্তু আজ কিনতে এসে দেখলাম দোকানে খুচরা মূল্যের তালিকা ঝুলিয়ে রেখেছে ১৬শত টাকা। কার কাছে বিচার দেবো? যেন দেখার কেউ নেই।’

খরমপুর এলাকার রহিম মিয়া নামের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার বাসায় এখন তিন বেলা রান্না হয় না। গ্যাসের দাম বাড়ার পর সকালের রান্না দিয়ে দুপুরে খাই। গত কয়েক বছরের ব্যবধানে ধাপে ধাপে দাম বাড়িয়ে ৮০০ টাকার সিলিন্ডার এখন ১৬ শত টাকায় পৌঁছেছে। সরকার নির্ধারিত দামেও যদি সিলিন্ডার পেতাম তবুও শ-দুয়েক টাকা সাশ্রয় হতো।’

বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের ডিলার মিঠুন আহমেদ বলেন, ‘সরকার দাম কমালেও এটা কেবল কাগজে কলমে। বাস্তবে আমরা এর কোনো প্রতিকার পাই না। গ্রাহক পর্যায়ে যেখানে ১৪ শত ২২টাকায় বিক্রি করার কথা, সেখানে আমরা ডিও করছি ১৪ শত ৭৫ টাকা। এরপর গ্যাস আনতে পরিবহন খরচ। নিজস্ব পরিবহনে পাইকারি দোকানে পৌঁছানোর খরচের সঙ্গে সিলিন্ডার প্রতি লাভ ধরি ১০ টাকা। এতে একটি সিলিন্ডারের দাম হয় ১৫ শত ২৫ টাকা। যেহেতু আমরা কোম্পানি থেকে কমিশন পাই, তাই সব বাদ দিয়ে ১৫শত টাকায় পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। পাইকারি ও খুরচা বিক্রেতার হাত ঘুরে গ্রাহক পর্যায়ে দাম হয়ে যায় ১৬ শত থেকে ১৬ শত ৫০ টাকা। এখানে আমাদের কারসাজি কোথায়? কোম্পানিকে আগে কম দামে গ্যাস দিতে হবে। তাহলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারব।’

জেএমআই এলপিজি গ্যাস কোম্পানির শেরপুর জেলার সেলস ডেভলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ রাফসান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কোম্পানিতে চাকরি করি। আমরা নীতি নির্ধারণের কেউ না। আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়, আমরা সেই কাজটি করি। এই ব্যাপারে আমাদের হাত নেই।’ 
 

তারিকুল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়