মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের মারধরে আহত যুবকের মৃত্যু 

আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের বিরোধ কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের এলোপাথারি মারধরে আহত তুহিন (২৭) মারা গেছে। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পুরা এলাকায় তাকে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নিহত তুহিন সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের আলমগীর সরকারের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী ও সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনার মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। নিহত তুহিন ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারীর সমর্থক ছিলেন। 

সোমবার পুরা ডিসি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যান তুহিন। সেখানে কল্পনার পক্ষের লোকজন তাকে তুলে বাগানে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। 

পরে অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। 

এ বিষয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী বলেন, ‘তুহিন আমার দলের সমর্থক ছিলেন। এ কারণে সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনার পক্ষের লোকজন বাবু কাজী, জিয়া সরকার, সৈকত দেওয়ান, আজহার মোল্লার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাকে ধরে নিয়ে এলোপাথারি পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়।’

আজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুহিনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়ে রিপন পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।’

নিজের লোকজনের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা বলেন, ‘ওই যুবক উগ্র ছিলেন। তিনি অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করতেন। শুনেছি কনসার্টের অনুষ্ঠানে গিয়ে ঝামেলা করেছেন। তখন কংশপুরা এলাকার কিছু ছেলে তাকে পিটিয়েছে। ছেলেটির মাথায় আঘাত ছিল। সেই আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।’ 

মহসিনা হক কল্পনা বলেন, ‘তুহিন গত নির্বাচনে রিপনের পক্ষে কাজ করেছেন। কিন্তু একটা ছেলে মারা যাক এটা আমি চাই না। আমার লোক জড়িত ছিল না। যারা জড়িত তাদের বিচার হোক।’

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কামাল প্রধান জানান, সোমবার রাত ৯টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তুহিন নামের ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। আহতের শরীরে মারপিটের চিহ্ন ছিল। অবস্থা আশংকাজনক দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

টঙ্গীবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান বলেন, ‘পেটানোর কারণে যুবকের মৃত্যুর কথা শুনেছি। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত ও মামলার ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’