ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন, ১৪ দিন পর স্থপতি ইমতিয়াজের লাশ শনাক্ত

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ২১ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ২০:৩১, ২২ মার্চ ২০২৩
বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন, ১৪ দিন পর স্থপতি ইমতিয়াজের লাশ শনাক্ত

স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূইয়া

বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হওয়া মুন্সীগঞ্জ পৌর কবরস্থান হতে স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূইয়ার (৪৭) লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। এর ফলে নিখোঁজ হওয়ার ১৪ দিন পর তার লাশ পেল স্বজনরা।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে লাশ উত্তোলন করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুস শামার উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিল।

লাশ বুঝে নেন নিহতের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার (৩৩)। এ সময় নিহতের ছোট বোন ঝর্না, বোনের স্বামী মেজবাউদ্দিন অপু ও  নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই মনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। লাশ উত্তোলনের পর মুখ দেখান হলে তারা লাশটি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার বলে শনাক্ত করেন।

মুন্সীগঞ্জে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয় স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার (৪৭) লাশ।

গত ৭ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন ইমতিয়াজ। ইমতিয়াজ ঢাকার তেজগাঁও থানার ডমিসাইল এলাকার মোহাম্মদ হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে।

গত ৮ মার্চ নিখোঁজের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার ঢাকার কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ইমতিয়াজ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির নকশার কাজ করতেন। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।

গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মরিচের সেতু এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পরের দিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি আঞ্জুমান মুফিদুলে হস্তান্তর করে। গত ৯ মার্চ বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি মুন্সীগঞ্জ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তবে লাশটি নিখোঁজ স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার বলে দাবি করে তাঁর পরিবার।

স্থপতি ইমতিয়াজ নিখোঁজের বিষয়ে গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রচার হয়। সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হলে এক ব্যক্তি কমেন্ট করে জানান, সংবাদে প্রচার করা বর্ণনা ও চেহারার একটি লাশ সিরাজদিখানে পাওয়া গেছে। পরের দিন শনিবার (১৮ মার্চ) সিরাজদিখান থানায় আসে ইমতিয়াজের স্বজনেরা। সুরতহাল করা সেই লাশের চেহারা, পরনের জামা কাপড়ের সঙ্গে নিখোঁজ ইমতিয়াজের মিল ছিল। এতে স্বজনেরা দাবি করেন, মুন্সীগঞ্জে দাফন করা লাশটিই ইমতিয়াজের। পরে নিখোঁজের স্বজনরা মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান আমলি আদালতে লাশ তোলার ব্যাপারে আবেদন করেলে ওই আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মানিক দাস সোমবার (২০ মার্চ) লাশ তোলার অনুমতি দেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক আজ মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ পৌর কবরস্থান হতে লাশ উত্তোলন করা হয়।

লাশ বুঝে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমতিয়াজের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘যারা আমার সন্তানদের মাথার উপর হতে ছায়া সরিয়ে দিয়েছে, আমি এর বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন বলেন, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় লাশটি হস্তান্তর করেছে। তবে শুরু হতে আইনি প্রক্রিয়ায় স্বজনদের সার্বিকভাবে পুলিশ সহয়তা করেছে। মামলাটি তদন্তে ডিবি পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

রতন/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়