ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মাঠের নামে শিক্ষকের জমি ‘দখলের’ চেষ্টা, দুজন গ্রেপ্তার

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৯, ২২ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ২২:৫০, ২২ মার্চ ২০২৩
মাঠের নামে শিক্ষকের জমি ‘দখলের’ চেষ্টা, দুজন গ্রেপ্তার

ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে খেলার মাঠের জন্য আবেদন করে এক ব্যক্তির জমি দখলের উদ্দেশে হামলা চালিয়ে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের মারধর ও তার বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় বুধবার (২২ মার্চ) আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা ও তার সরকারি চাকরিজীবী ছেলেসহ ৩৫ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক।

এর আগে, সোমবার (২০ মার্চ) বিকেলে উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামে ওই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তাররা হলেন, আব্দুল জলিলের ছেলে জসিম উদ্দিন (২০) ও মো. মানিক মিয়ার ছেলে মো. শামসুল হক (৪৫)।

ভুক্তভোগী মো. ফজলুল হক মাস্টার (৬৫) ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বড় নালাই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বড়নালাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

মো. ফজলুল হকের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি বড়নালাই গ্রামে গাজীখালি নদীপাড়ের ১৫১ নম্বর দাগের খাস জমিতে একটি মাঠ করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন মো. আতিকুর রহমান। ওই জমি ১ নম্বর খতিয়ানের ১৫১ নম্বর দাগের। জমির পরিমাণ প্রায় ৬০ শতাংশ, যার প্রায় ৪০ শতাংশই নদীগর্ভে। জমির পাশেই এসএ খতিয়ান ২৭৬, এসএ ৮৯৫, আরএস খতিয়ান ১১৪, আরএস ১৫২ নম্বর দাগে ৭৯ শতাংশ জমি রয়েছে তাদের।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জমি পরিদর্শন করে সীমানা নির্ধারণ করেন। সীমানার ভেতরে নিজেদের ওই ৭৯ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ জমি থাকায় বিষয়টি ধামরাইয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তারকে জানান তারা। এসময় ফারজানা জমির মালিক দাবিদারদের সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়ে দেন। বিষয়টি জানতে পেরে আতিকুর ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার রাতে ১৫-২০ জনকে নিয়ে শাহজাদা কবিরদের জমির লাউয়ের মাচা ভেঙে ফেলেন এবং কাঁঠালগাছসহ বিভিন্ন ধরনের গাছপালা কেটে ফেলেন। এ ঘটনার পরে অভিযুক্তরা জোর করেই জমিটি দখল করে ও মাঠ তৈরির নামে পুরো জমিটিতে লাল পতাকা লাগায়। এরপর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করলেও অভিযুক্তরা তাতে সাড়া দেননি।

পরে গত ২০ মার্চ ভুক্তভোগী শিক্ষক আদালতে গিয়ে জমিটিতে ১৪৪ ধারা চেয়ে ও জমি মালিকানা দাবি করে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি জানতে পেরে মো. আওলাদ হোসেন ও মো. আতিকুর রহমানের অনুসারীরা ২১ মার্চ রাত ১০টার দিকে আবারও ওই শিক্ষকের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় দা, লাঠি, লোহার রড, ছ্যান, শাবল, চাপাতিসহ দেশিয় অস্ত্রসহ জোটবদ্ধ হয়ে বাড়ির পাশের গাছ কাটার চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে তারা হামলা চালিয়ে ওই শিক্ষক ও তার ভাতিজাকে মারধর করে নিলাফুলা জখম করে। একপর্যায়ে তারা বাড়িতেও হামলা চালিয়ে ঘর ভাঙচুর ও গাছপালা কেটে ফেলে, ঘর থেকে ট্র্যাঙ্কে রক্ষিত স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে। 

বুধবার (২২ মার্চ) ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক ধামরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ ও মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করে।

ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) নির্মল কুমার দাস বলেন, জমি ও বাড়ি দখল চেষ্টা এবং মারধরের মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতেও অভিযান চলছে।

ধামরাইয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার বলেন, মাঠের আবেদন করা হলেও এখনো মাঠ হিসেবে সেটি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ওই স্থানটিতে ব্যক্তিগত জমি রয়েছে বলে শুনেছি।

সাব্বির/এনএইচ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়