ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’, শিক্ষকের ওপর চড়াও হলেন সরকারি কর্মকর্তা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৩, ২৬ মার্চ ২০২৩  
‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’, শিক্ষকের ওপর চড়াও হলেন সরকারি কর্মকর্তা

স্যার’ না ডেকে ‘ভাই’ বলায় শিক্ষকের ওপর চড়াও হলেন সরকারি এক কর্মকর্তা। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে। 

রোববার (২৬ মার্চ) সকালে কুলিয়ারচর উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে শহীদ সেলিম স্মৃতি ভাস্কর্যে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সরকারি ওই কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান কুলিয়ারচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার। তিনি ওই অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন।

এসময় উনাকে ‘স্যার’ না ডেকে ‘ভাই’ বলায় লুৎফুল আজাদ নামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের ওপর চড়াও হন তিনি। ওই শিক্ষক কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের উত্তরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কুলিয়ারচর উপজেলা শাখার সভাপতি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বাধীনতা দিবসের ওই অনুষ্ঠান চলাকালে শিক্ষক লুৎফুল আজাদ সরকারি কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমানকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেন। এতে মুশফিকুর ক্ষেপে যান এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মাইক্রো ফোনের সামনেই বলতে থাকেন, ‘কে আপনার ভাই? নিজেকে কত বড় নেতা দাবি করেন? স্যার বলেন নাই কেন?’ 

এসময় অনুষ্ঠানে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম, কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মস্তুফা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছাসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সবাই মাইকে এসব কথা শুনে হতবাক হয়ে যান।

এ ব্যাপারে শিক্ষক লুৎফুল আজাদ জানান, ‘আমি আমাদের সংগঠনের পক্ষে ফুল দিতে এসেছিলাম। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও সংগঠনের নাম না বলায় আমি উনাকে ভাই সম্বোধন করে বিষয়টি জানতে চাই। তখন তিনি সবার সামনে আমার ওপর চড়াও হোন। স্যার না বলায় তিনি আমার ওপর এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করবেন বুঝতে পারিনি। এসময় শিক্ষক হিসেবে নিজের কাছেই খুব অপমানবোধ করছিলাম।

এদিকে, কুলিয়ারচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি নিছক ভুল–বোঝাবুঝি ছিল। আসলে পুষ্পার্ঘ্য পর্বে সিরিয়াল নিয়ে সবাই আমাকে বিরক্ত করছিলেন। সবার দাবি, তাদের সংগঠনের নাম আগে ডাকা হোক। লুৎফুল আজাদ সাহেবও এসে যখন আমার কাছে একই ইস্যুতে কথা বলতে চাচ্ছিলেন, তখন আমি মেজাজ ধরে রাখতে পারিনি। এই ক্ষোভ প্রকাশের সঙ্গে স্যার বলা না–বলার সম্পর্ক নেই।

পরে, আজ দুপুর ১২টার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা দুজনকে ডেকে বিষয়টির মীমাংসা করে দেন।

এ ব্যাপারে ইউএনও সাদিয়া ইসলাম জানান, ঘটনার সময় আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। এসময় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ নিয়ে কিছু ঝামেলার সৃষ্টি হয়। সবাই সঞ্চালকের ওপর ক্ষুব্ধ হন। শিক্ষক লুৎফুল আজাদের সঙ্গে সঞ্চালকের সামান্য ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। দুজনের সাথেই কথা বলার পর একে অপরের ভুল বুঝতে পেরেছেন।

রুমন চক্রবর্তী/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়