ঢাকা     সোমবার   ২০ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

মোখা আতঙ্কে আম পেড়ে বিক্রি করে দিচ্ছেন চাষিরা

শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ১৪ মে ২০২৩   আপডেট: ১২:১৭, ১৪ মে ২০২৩
মোখা আতঙ্কে আম পেড়ে বিক্রি করে দিচ্ছেন চাষিরা

ঘূর্ণিঝড় মোখা আতঙ্কে বাগান থেকে আম পেড়ে বিক্রি করে দিচ্ছেন সাতক্ষীরার আমচাষিরা। ঝড়ে আম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তারা দ্রুত আম পেড়ে বাজারে তুলছেন। এতে বাজারে পর্যাপ্ত আমের সরবরাহ থাকলেও নেই ক্রেতা। বাধ্য হয়ে লোকসানে আম বিক্রি করছেন বিক্রোতারা। ফলে বাজারে আমের মূল্য দুই দিনের ব্যবধানে অর্ধেকে নেমে এসেছে। 

আমচাষিরা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানলে সব আম পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। এ জন্য তারা আগে ভাবে আম পেড়ে ফেলছেন। 

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলায় ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগানের সংখ্যা ৫ হাজার ২৯৯টি। জেলায় আমচাষির সংখ্যা ১৩ হাজার ১০০। চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। প্রথম ধাপে ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ পাড়া ও বাজারজাত শুরু হয়। দ্বিতীয় ধাপে ১২ মে থেকে হিমসাগর আম পাড়া ও বাজারজাত শুরু হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১৮ মে ল্যাংড়া ও চতুর্থ ধাপে ২৮ মে আম্রপালি আম সংগ্রহ শুরু করার কথা।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল এলাকার আমচাষি আনিসুর রহমান জানান, ২৭টি বাগানে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ টাকা। বিপুল পরিমাণ আম হওয়ায় ১০-১২ লাখ টাকা লাভের আশা করেছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে সব আম পেড়ে বিক্রি করছেন। কিন্তু বাজারে দর পাচ্ছেন না। এখন লাভ হওয়া তো দূরের কথা, আসল টাকা উঠলেই স্বস্তি পাবেন।

কলারোয়া উপজেলার ইলিশপুর গ্রামের আমচাষি মোহাম্মদ কবিরুল ইসলাম জানান, ২৫ বিঘা জমিতে ১৫টি আমবাগান রয়েছে। গত মৌসুমে আম চাষে লাভের মুখ দেখতে পারেননি। চলতি মৌসুমে আম ভালো হয়েছে। গত মৌসুমের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু এপ্রিল মাসের শেষের দিকে আকস্মিক ঝড়ে বিপুল পরিমাণে কাঁচা আম পড়ে যায়। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভাদড়া গ্রামের আম ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছরের মধ্যে চলতি মৌসুমে আম বাগানগুলোতে সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে।

মৌসুমের শুরুতে বড় বাজারে আম বিক্রি করতে এসেছি। তবে দাম শুনে মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। গত মৌসুমে গোবিন্দভোগ ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। বাজারে এমন দাম গেলে এ বছর আমার কয়েক লাখ টাকা লোকসান হবে।

সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড়বাজারের কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু জানান, তীব্র গরমে কয়েক দিনের মধ্যে আম পেকেছে। তার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে চাষিরা আম পেড়ে ফেলছেন। গোবিন্দভোগ,
গোপালভোগ আমের চাহিদা অনেক কম থাকায় জেলার বাইরের আম ব্যবসায়ীরা এখনো আসেননি।

তিনি আরও জানান, তবে হিমসাগর আম সংগ্রহ শুরু হলে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যাপ্ত আম ব্যবসায়ীরা বড়বাজারে আসবেন এবং আম ক্রয় করবেন। ফলে ক্ষুদ্র আমচাষিরা ও কৃষকরা লাভবান হবে বলে আমরা আশা করছি।

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়