ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২১, ২৬ মে ২০২৩   আপডেট: ১৫:২৫, ২৬ মে ২০২৩
‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’

‘গুম এখনই বন্ধ করুন এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে অবিলম্বে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিন। না হলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। একের পর এক নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) আসতে থাকবে। এতে দেশের সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ 

‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ’ উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ মে) খুলনায় আয়োজিত আলোচনা সভা, মানববন্ধন ও র‌্যালিতে অংশ নিয়ে বক্তারা এ কথা বলেন। 

বেলা সাড়ে ১১টায় মহানগরীর খানজাহান আলী রোডস্থ জাতিসংঘ পার্কের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে যশোরের বেনাপোলের মো. রিপন হোসেন অভিযোগ করে জানান, তার ছোট ভাই মো. রেজোয়ান হোসেনকে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বেনাপোল থানা পুলিশ আটক করে। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে তাকে গুম করা হয়। এ ঘটনায় তারা ভয়ে মামলা করার সাহস পায়নি। দীর্ঘ ৭ বছরেও ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে তার বৃদ্ধ মা-বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। 

সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনির বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বলেন, ‘২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই হিমেলের নেতৃত্বে পুলিশ জনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর গত ৭ বছরেও তার সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ।’

শেখ আব্দুর রাশেদ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি এবং জনিকে ফিরিয়ে দিতে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের খুলনা মহানগর শাখার সদস্য সচিব কাজী মোতাহার রহমান বাবু, গণঅধিকার পরিষদ খুলনা জেলা শাখার আহবায়ক মো. বিল্লাল হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলা সমন্বয়কারী মুনীর চৌধূরী সোহেল, মানবাধিকার কর্মী শেখ আব্দুল হালিম, সাতক্ষীরার মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট শেখ আলমগীর আশরাফ, সাবেক নৌ বাহিনীর কর্মকর্তা ডা. নূরুল ইসলাম প্রমুখ। 

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, গুম মানবতাবিরোধী অপরাধ। রাষ্ট্র চাইলেই গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ হয়ে যাবে। বক্তারা গুম বন্ধ এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান। 

তারা বলেন, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্ত্রী-সন্তানরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম কষ্টে রয়েছেন। এতে দেশের সাধারণ নাগরিকরাও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চা এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। 

গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ও মানবাধিকার কর্মীদের সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক’ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক কেএম জিয়াউস সাদাত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দিবসের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুজ্জামান।

 

নুরুজ্জামান/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়