ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নিয়ম না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ 

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৫, ১০ জুন ২০২৩  
নিয়ম না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ 

পাবনা পৌর এলাকার কালাচাঁদপাড়ায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রভাব খাটিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এতে প্রতিবেশির ভবন হুমকির মুখে পড়েছে বেলে জানা গেছে। বিভিন্ন দপ্তরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

শনিবার (১০ জুন) দুপুরে কালাচাঁদপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মলেন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী আব্দুল বারীর মেয়ে বিনতে সাম বারী।

বিনতে সাম বারী অভিযোগ করে বলেন, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। প্রতিবেশী জিসিআই পাবলিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক তাদের বাড়ির সীমানা ঘেঁষে মাত্র সোয়া কাঠা জমির উপর ছয়তলা ভবন নির্মাণকাজ করছেন। বহুতল ভবন নির্মাণে পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী চারিদিকে ৩ ফুট করে চারপাশে জমি ফাঁকা রেখে ভবন নির্মাণ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু ভবন মালিক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক তা মানছেন না। পৌরসভার নীতিমালা এবং বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ওই ভবন নির্মাণের কারণে আমাদের দোতালা ভবনের উপরতলা ও নীচতলায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বসবাস। ওই ভবনের পানি ও পয়োনিষ্কাশনের পাইপ আমাদের জমির উপর দিয়ে এবং বৃষ্টির পানি, ভবনের ছাদের পানি ও কার্ণিশের সমস্ত পানি আমার জমির উপর পড়ে ভবনের ক্ষতি করছে। ভবন মালিক আব্দুর রাজ্জাককে বারবার বলা হলেও তিনি কারো কথা শুনছেন না।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে পাবনা পৌরসভা মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি বরং অভিযোগ দেওয়ার কারণে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভবন নির্মাণের মালিক আব্দুর রাজ্জাক আমার বাবা-মাকে প্রায়ই হুমকি দিচ্ছেন। তাদের হুমকিতে আমার বাবা-মা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের লোকজন আমার স্বামীকেও মোবাইলে ফোনে নানা রকম হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।

বিনতে সাম বারী বলেন, আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ ভবনের ক্ষতিপূরণ এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ ও ভবন মালিক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি। ওই অবৈধ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য লিখিত এবং মৌখিকভাবে বারবার পাবনা পৌরসভা, পাবনা জেলা প্রশাসক, পাবনা নির্বাহী প্রকৌশলী, গণপূর্ত বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও আমরা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। 

ভুক্তভোগী আব্দুল বারী বলেন, যখন তারা ভবন নির্মাণ শুরু করেন তখনই আমরা তাদেরকে নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ করতে বলি। আমাদের কোন কথা তারা শোনেননি। এরপর আমরা পৌরসভায় অভিযোগ দেই। আমাদের একটাই দাবি জায়গা মেপে তাদের জায়গাতে ভবন নির্মাণ করুক আমাদের কোন আপত্তি নেই। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি অসুস্থ্য থাকায় মন্তব্য পাওয়া যাযনি। তবে তার মেয়ে রাজিয়া সুলতানা রিনি বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিক, আপনারা মেপে দেখুন কার জায়গা কতটুকু। ছয় তলা নয়, আমাদের ৫ তলার প্ল্যান আছে। অনুমতি আছে কিনা সেটা কাগজপত্রে কথা হবে। আপনারা (সাংবাদিক) আসার আগে আমাদের জানাতে হবে। আমরা কাগজপত্র দেখাবো।’

এ বিষয়ে পাবনা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম শাহীন বলেন, দেড় কাঠা জমির উপরে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণের কোন অনুমোদন দেয়নি পৌরসভা। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহীন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়