ঢাকা     রোববার   ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২৮ ১৪৩১

দুই প্রবীণ আ.লীগ নেতাকে কটাক্ষ করার অভিযোগ এমপি মমতাজের বিরুদ্ধে

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৬, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৮:৪২, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
দুই প্রবীণ আ.লীগ নেতাকে কটাক্ষ করার অভিযোগ এমপি মমতাজের বিরুদ্ধে

মমতাজ বেগম

মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে তার নির্বাচনী এলাকার দুটি উপজেলা পরিষদ ও অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যানদের বৈরী সম্পর্ক চলছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এক সভায় হঠাৎ করেই জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন ও সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ ফটোকে নিয়ে কটাক্ষ করে প্রকাশ্যেই বক্তব্য দিয়েছেন তিনি বলে অভিযোগ উঠেছে। তার সেই বক্তব্যের ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে মমতাজ বেগমকে বলতে শোনা যায়, ওই সময় ভাঙা টিনের ঘর ছিল আমাদের মহীউদ্দীন ভাইয়ের। অহন সেখানে বড় বড় ৩০ তলা বিল্ডিং, আরে ১০ তলা করে তিনটা হলে ৩০ তলা হয় না। ইডা কার মহীউদ্দীন ভাইয়ের, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বিল্ডিং হয়ছে, ঢাকায় বাড়িঘর হয়েছে। বিদেশে টাকা-পয়সা আছে ভালো, এটা তো ভালো। আমরা দেখছি ওই সময় কিছুই নাই। আমি দেখছি, আমি ওই ঘরে গিয়ে বসছি।

জেলা আওয়ামী লীগের আরেক নেতা সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ ফটোকে নিয়ে কটাক্ষ করে মমতাজ বলেন, ফটো ভাই-এর কালার কালা। ওনারে দেখলে আমি ডরাইতাম।  

আরো পড়ুন:

আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপকে বন্ধ্যাত্ব করে তিনি বলেন, ‘আমরা কি বাউয়ামী লীগ, ওয়াতে বাচ্চা হবে না। অতএব বাউয়ামী লীগ দিয়ে আমরা কোনো কাজ করতে চাই না।’

মমতাজের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন টিপু বলেন, সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্ষীয়ান নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীনকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। এই ধরনের অশালীন বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাই।  

নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে-দুর্দিন গোলাম মহীউদ্দিনের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি আমরা। গোলাম মহীউদ্দিন অন্য কোনো দল থেকে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেননি। ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করেই দল করেছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখনও আছেন। প্রতিটি আন্দোলনে রাজপথে থেকেই সংগ্রাম করেছেন এই বর্ষীয়ান নেতা। পাশাপাশি এমপি মমতাজ আরও একজন বর্ষীয়ান নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ ফটোর গায়ের রঙ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন এটা খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। এই দুই প্রবীণ নেতা রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ছাত্রলীগ দিয়ে। কিন্তু আজ তারা কটাক্ষের শিকার হলেন। আজ কোথায় রাজনৈতিক দর্শন? এমপি মমতাজ বেগম সংসদ সদস্য হয়েছেন খুব বেশি দিন হয়নি, তিনি আগে কি ছিলেন সেটা তিনি ভুলে গেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক ও হতাশার।  

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ ফটো বলেন, ‘মমতাজ বেগমের এভাবে কথা বলা ঠিক হয়নি।’  

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, অনেকে বিষয়টিকে বাজেভাবে উপস্থাপন করলেও তিনি ওই বক্তব্যটি পজিটিভলি দিয়েছেন। আগে আমাদের কারোরই অবস্থা বেশি ভালো ছিল না। এখন দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের সবার অবস্থা ভালো হয়েছে। তাছাড়া কতো আগে থেকে পুরনো নেতাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক সেটি বোঝাতে গিয়ে আমি বলেছি তার বাসায় যেতাম, তখন একটি টিনের ঘর ছিলো।

চন্দন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়