ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

পাবনা-৩ 

নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৮:১৮, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর

পাবনা-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী মকবুল হোসেন এমপির বিরুদ্ধে হুমকি-ধামকি দেওয়া ও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনার চাটমোহর পৌর সদরে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব অভিযোগ করেন।

বক্তব্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হামিদ মাস্টার অভিযোগ করে বলেন, ‘বিভিন্ন ইউনিয়নে বর্ধিত সভা করার নামে নৌকার প্রার্থীর লোকজন নানারকম উস্কানি ও হুমকি-ধামকিমুলক বক্তব্য দিচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আমার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। ইতোপূর্বে নির্বাচনে অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা এই সভা করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘জেলা সদর থেকে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা নির্বাচনী এলাকায় এসে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছেন। তারা বলছেন, এখানে নৌকা ছাড়া কোনো প্রতীক থাকবে না। তারা অশ্লীল ভাষায় আমাকে চরিত্র হনন করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এটি নির্বাচনী আচরণ পরিপন্থি কাজ। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, তারা যেন এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ অভিযোগ করেন, ‘বর্তমান এমপি ও নৌকার প্রার্থী মকবুল হোসেন নিজেও বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে ফোন করে আমার কর্মী-সর্মকদের হুমকি দিচ্ছেন, নৌকার ভোট না করলে পুলিশ দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করিয়ে শায়েস্তা করা হবে। তিনি তার পরাজয় নিশ্চিত জেনে এমন পরিস্থিতি তৈরি করছেন। সেইসঙ্গে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাও নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। নৌকার লোকজন নিয়ে সভা করছেন। বিষয়টি আমি পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। আশা করি তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, ‘চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ৮০ ভাগ কর্মী-সমর্থক আমার পক্ষে আছেন। কারণ বিগত ১৫ বছরে এমপি ও তার ছেলেদের কর্মকাণ্ডে মানুষ ফুঁসে উঠেছে। এ এলাকার মানুষকে তারা জিম্মি করে রেখেছিল। মানুষ নৌকার বিরুদ্ধে কিংবা আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন না। অবস্থান নিচ্ছেন এমপি ও এমপি’র ছেলের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী আরও বলেন, ‘আমি বিদ্রোহী প্রার্থী নই, স্বতন্ত্র প্রার্থী। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনও মিথ্যে কথা বলেন না। তাঁর নির্দেশিত পথেই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনতেই আমাদের এই প্রয়াস।’ 

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, পাবনা-৩ এলাকার ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিজের ভোট নির্বিঘ্নে দিতে পারে, সেই সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ভোটারদের মধ্যে যেন আতঙ্ক, ভয় না থাকে; সেদিকে নজর দিতে হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টারের এসব অভিযোগের বিষয়ে পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মকবুল হোসেন বলেন, ‘পাবনা-৩ আসনে আমাকে নৌকা দিয়েছেন আমার নেত্রী শেখ হাসিনা। আমি বিগত ১৫ বছরে কী করেছি, এলাকার মানুষের জন্য কতটুকু করেছি, আপনারা তা জানেন। উনি (স্বতন্ত্র প্রার্থী) যে অভিযোগ করেছেন, তার জন্য তাঁকে বলেন, কাকে বা কাদের হুমকি দিয়েছি, তাদের মোবাইল নম্বর নিয়ে আপনারা (সাংবাদিকরা) কথা বলেন। অভিযোগ সত্য হলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিতে বলেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পূর্ণরুপে মেনে চলেছি। আমি ঘরে বসে আছি, বের হচ্ছি না। কেউ দেখা করতে এলে, তাদের বলছি নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে।’  

এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান এবং পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।
 

শাহীন/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ