ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৮ জুলাই ২০২৫ ||  আষাঢ় ২৪ ১৪৩২

রংপুর-১ আসনে আলোচনায় ২ স্বতন্ত্র প্রার্থী 

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৬, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৭:০৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
রংপুর-১ আসনে আলোচনায় ২ স্বতন্ত্র প্রার্থী 

মসিউর রহমান রাঙ্গা ও আসাদুজ্জামান বাবলু

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে ভোটের লড়াই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে জমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জোটগত কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে গেছে আওয়ামী লীগ। এতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলোচনার এসেছেন স্বতন্ত্র আসাদুজ্জামান বাবলু ও মসিউর রহমান রাঙ্গা। নিজেদের প্রার্থী না থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা।

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর জোরেশোরে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন রংপুর-১ আসনের প্রার্থীরা। লিফলেট হাতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তারা।

তিস্তা নদী বেষ্টিত এই আসনে আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন ৯ প্রার্থী। প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাতিজা হুসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ লড়ছেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে। জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন ট্রাক প্রতীকে। আর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে দলটির উপজেলা সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলুও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেটলি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী এখন ভোটারদের আলোচনার রয়েছেন।

গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী বাজারে কথা হয় আবুল নামের এক ভোটারের সঙ্গে। আবুল বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবলু বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। আমাদের এই দিকে বাবলু ছাড়া কিছুই নেই। তবে বাবলুর ভোট মাঠে লাফালাফি করে না। ভোটের দিন দেখিয়ে দেবে বাবলু কত জনপ্রিয়।’ 

বাবলুর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কে হতে পারে?— এমন প্রশ্নের জবাবে এই ভোটার বলেন, ‘মশিউর রহমান রাঙ্গা এলাকায় কিছুটা উন্নয়ন করেছেন, তাই তিনি এবার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন; তবে জয়ী হওয়ার মতো নয়।’

গঙ্গাচড়া উপজেলা চত্বরে কথা হয় লিটন হাসান নামে এক ভোটারের সঙ্গে। লিটন বলেন, ‘নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে রাঙ্গা না বাবলু, কে বিজয়ী হবে; এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বোঝা যাচ্ছে না। তবে এই দুই জনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এবার ভোটের মাঠে।’ 

তারমতে শেষ পর্যন্ত লাঙ্গলের প্রার্থী আসিফ শাহরিয়ার যদি স্থানীয় জাতীয় পার্টিকে একত্রিত করে ভোটের মাঠ গুছিয়ে নিতে পারে, তবে তারও বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। 

শেষ সময়ে আসনটি থেকে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। নিজেদের পছন্দের প্রার্থী না থাকায় দলটির তৃণমূলের ভোটারদের সমর্থন এখন বিভিন্ন প্রার্থীর দিকে।

জোটগত সমঝোতায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী আসিফ শাহরিয়ার জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হলেও তাকে টপকে তিন মেয়াদে এমপি রাঙ্গা নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে সব ছাপিয়ে স্থানীয় প্রার্থী হিসেব জনগণের রায়ে বিজয় ইতিহাস গড়তে চান‌ স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবলু। 

রংপুর-১ আসনের বর্তমান সংসদ স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘গত ১০ বছর এমপি এবং মন্ত্রী থাকা অবস্থায় এলাকায় যে উন্নয়ন করেছি, তা ইতিহাস হয়েছে। দলীয় প্রতীক না পেলেও অসুবিধা নেই। উন্নয়ন আর ব্যক্তি রাঙ্গাকে দেখে এবারও এই আসনের ভোটাররা আমাকে বিজয়ী করবেন।’ 

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, ‘রংপুর-১ আসনের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একজন স্থানীয় সংসদ সদস্য। তারা এবার সেই সুযোগ পেয়েছে। ৭ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে তারা বুঝিয়ে দেবে। আপনারা ওই দিনে বুঝতে পারবেন সাধারণ মানুষের মনের কথা। সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে আমার বিজয় শতভাগ নিশ্চিত।’

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে ১২ প্রার্থীর মধ্যে তিন জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় এখন ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নয় জন। আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৬। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৪৮, নারী ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯৬ জন। 

আমিরুল/বকুল

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়