নিজেদের দুর্গে জামানত হারালেন জাপা প্রার্থীরা

লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত তিনটি সংসদীয় আসন এক সময়ে ছিল জাতীয় পার্টির দুর্গ। বিশেষ করে লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনটিতে টানা সাতবার নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রয়াত মজিবর রহমান। সেই আসন তো বটেই, এবারের নির্বাচনে বাকি দুটি আসনও হারিয়েছে দলটি। শুধু তাই নয়, জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা সংসদ নির্বাচনে জামানতও হারিয়েছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাটের তিনটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটিতে বিপুল ব্যবধানে হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। একটি আসন থেকে নির্ধারিত সময়ের আগেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন দলটির এক প্রার্থী। লালমনিরহাট-১ ও ২ আসনে জাপার দুই প্রার্থী ভোটের হিসেবে তৃতীয় হয়েছেন, যা অঙের হিসেবে জামানত হারানোর জন্য উপযুক্ত।

রোববার (৭ জানুয়ারি) রাতে জেলা রিটার্নিং কার্যালয় থেকে বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, লালমনিরহাট-৩ (সদর উপজেলা) আসনে জয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট মতিয়ার পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৩৩৮ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী জাবেদ হোসেন পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৯৭ ভোট। তৃতীয় হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাহিদ হাসান। তিনি পেয়েছেন ১০ হাজার ৪৬১ ভোট। এই আসনে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ১ হাজার ১৫৩টি। বিধান অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট না পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সেই হিসাবে জামানত বাঁচাতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাহিদ হাসানের  প্রয়োজন ছিল অন্তত ১২ হাজার ৬৪৫ ভোট।

লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালিগঞ্জ) আসনে জয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ পেয়েছেন ৯৭ হাজার ৪৩৪ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হক পেয়েছেন ৫১ হাজার ৩৩৮ ভোট। এই আসনেও তৃতীয় হয়েছে জাতীয় পার্টির ‌‌‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন। তিনি পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ১৭৩ ভোট। লালমনিরহাট-২ আসনে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮১টি। একই বিধান অনুযায়ী, জামানত বাঁচাতে এই আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের প্রয়োজন ছিল অন্তত ১৯ হাজার ৫৬১ ভোটের।

এদিকে লালমনিরহাট-১ (পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা) আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান জাতীয় পার্টির ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুল হক বসুনিয়া। এই আসনে নৌকার প্রার্থী মোতাহার হোসেন ৯০ হাজার ৩৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন।