ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও-২ 

বাবার দায়িত্ব এখন ছেলের কাঁধে

মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল, ঠাকুরগাঁও  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ১০ জানুয়ারি ২০২৪  
বাবার দায়িত্ব এখন ছেলের কাঁধে

দাবিরুল ইসলাম (বাঁয়ে) ও তার ছেলে মাজহারুল ইসলাম সুজন

টানা ৩৫ বছর ধরে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন দাবিরুল ইসলাম। দীর্ঘ এই পথ চলায় তিনি জাতীয় সংসদে এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাধারণের মধ্যে জনপ্রিয়তা এতেটাই বেশি ছিল যে, এখনো তার শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী সামনে আসেনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছেলেকে নির্বাচিত করিয়ে নিজের অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব ছেলের কাঁধে তুলে দিলেন এই রাজনীতিবিদ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীরা বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ গ্রহণ করেছেন। শপথ নিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের এখন সাংসদ সদস্য দাবিরুলের ছেলে মাজহারুল ইসলাম। গত রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকে মো. মাজহারুল ইসলাম ১ লাখ ১৫ হাজার ৪১৬ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগ নেতা মো. আলী আসলাম জুয়েল। ট্রাক প্রতীকে তিনি ৫৭ হাজার ২৩৫ ভোট পান।

১৯৮০ সালের পর ইউপি চেয়ারম্যান রূপে আবির্ভাব হয় দবিরুল ইসলামের। সে সময় তিনি বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী হিসেবে ঠাকুরগাঁও-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ আ.লীগে যোগ দিয়ে ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম, ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন।

ঠাকুরগাঁও-২ আসন থেকে টানা ৭ বার নির্বাচিত হওয়াই দাবিরুল ইসলামের জনপ্রিয়তার উদাহরণ। ১৯৯৬ সালের পর থেকে এই আসন নিয়ে কখনো ভাবতে হয়নি আওয়ামী লীগকে। দলটি সরকার গঠন করুব বা বিরোধী দলেই থাকুক না কেন দবিরুল ইসলাম সংসদে তার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। 
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের কোনো নির্বাচনে দবিরুল ইসলামের বিকল্প হিসেবে তেমন চর্চাও শোনা জায়নি। ১৯৮০ সালের পরে ইউপি চেয়ারম্যান বা ৩৫ বছরে সংসদ নির্বাচনে কখনোই পরাজয় দেখেনি দবিরুল ইসলাম। ছিলেন জনগণের ভালোবাসায় সফল অবিরাম।

এদিকে, ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের নতুন নৌকার মাঝি মাজহারুল ইসলাম সুজন দীর্ঘ সময় বাবার রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় এখন যথেষ্ট পরিপক্ব। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় তৃণমূল আ.লীগেও তার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। 

এই বিষয়ে দবিরুল ইসলামের ছেলে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমার বাবা এই এলাকার মানুষের প্রাণ ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। আমার বাবা এই এলারকার মানুষের জন্যে অনেক করেছেন। এখনো তার কিছু স্বপ্ন বাকি রয়েছে। যা আমার মাধ্যমে পূরণ হবে বলে আশা করি।’

দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘দেখতে দেখতে আমি এখন ৭৬ বছরে পা দিয়েছি। বেশ অসুস্থ। এখন আর জনগণের মধ্যে সেভাবে মিশতে পারি না। তাই ছেলের হাতে সবকিছুর ভার বুঝিয়ে দিয়ে অবসরে যেতে চাই। আজ এই আসনের নৌকার হাল ধরেছে ছেলে। এই ৩৫ বছরে ৭ বার সংসদ সদস্য হয়ে যতোটা না খুশি হয়েছি, ছেলেকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখে তার চেয়েও ভালো লাগছে।’

মাসুদ

ঘটনাপ্রবাহ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়