ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পোস্টমাস্টার উধাও

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ১৯ মার্চ ২০২৪  
গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পোস্টমাস্টার উধাও

রাজশাহীর তানোরে গ্রাহকদের সঞ্চয়পত্রের অর্ধকোটির বেশি টাকা নিয়ে পোস্টমাস্টার পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মুখছেদ আলী নামের এই পোস্টমাস্টার উপজেলা পোস্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন। ৩০ জন গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তাকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছে ডাক কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি ২০ দিন আগে ডাক বিভাগের নজরে আসে।

রাজশাহীর ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (তদন্ত) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এতথ্য নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বলেন, ‘পোস্টমাস্টার মুখছেদ আলী কৌশলে গ্রাহকদের সই করিয়ে নিজে টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে বলে জানা গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকের সঞ্চয়পত্র তুলে নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে সেটির প্রমাণ পেয়েছি। এরপর মাইকিং করা হয় আশেপাশের গ্রামে গ্রামে। এটি জানার পর মানুষ তাদের কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসছেন। এসব কাগজপত্র পরিশোধিত অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে। বাস্তবে গ্রাহক কোনো টাকা পায়নি। আমরা এখন পর্যন্ত ৩০ জন গ্রাহকের অর্ধকোটির বেশি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে পেরেছি।’

ভুক্তভোগী তানোর উপজেলার কুঠিপাড়া এলাকার আব্দুর রাকিব বলেন, ‘আমি সবশেষ যখন টাকা জমা দেই তখন আমার জমার বইয়ের একটি জায়গায় সই করতে বলেন পোস্টমাস্টার মুখছেদ আলী। আমি তার দেখানো জায়গায় সই করে বাড়ি চলে যাই। গত মাসে আমি টাকা তোলার জন্য গিয়ে জানতে পারি যে আমার হিসাবে টাকা নেই। তুলে নেওয়া হয়েছে।’  

ভুক্তভোগী রিক্তা, জয়নাল আবেদীন, কাওছার আহমেদসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, তাদের একেক জনের কাছ থেকে ২ লাখ, ৫ লাখ, ১২ লাখ করে টাকা নিয়ে উপজেলা পোস্ট অফিসের মাস্টার মুখছেদ আলী উধাও হয়েছেন।

পোস্টমাস্টার জেনারেলের কার্যালয়ের রাজশাহীর পোস্টমাস্টার জেনারেল কাজী আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শুনেছি এক পোস্টমাস্টার গ্রাহকের টাকা তুলে নিয়েছেন। আমরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। এই ঘটনায় দুদকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গ্রাহকের অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্যও আমরা চেষ্টা করব।’

তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেননি। তারপরও আমরা বিষয়টি গুরত্বের সঙ্গে দেখছি।’

অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার মুখছেদ আলীর বক্তব্য জানতে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। 

রাজশাহীর ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (তদন্ত) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সোমবার আমি তানোর পোস্ট অফিসে গিয়েছিলাম। তাকে থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, দুঃখের বিষয় তিনি অফিসে আসেননি। আমরা থানায় একটি জিডি করেছি। যেহেতু, তিনি সরকারি কর্মচারী, তার বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করা যায় না। তাই এটি দুদকে অভিযোগ হবে। সেখানেই তার মামলা দায়ের করা হবে।’

দুদকের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের মৌখিকভাবে ডাক বিভাগ থেকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। অভিযোগের কপি এখনও পৌঁছায়নি। অভিযোগ পেলে সেটি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়