ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

রুয়েটের সাবেক ভিসি ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৯, ২৫ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৭:৪০, ২৫ মার্চ ২০২৪
রুয়েটের সাবেক ভিসি ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেন

নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ২৭ মার্চ মামলা দায়ের হতে পারে।

সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেন দুজনেই এখন রুয়েটে কর্মরত আছেন। উপাচার্যের মেয়াদ শেষে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগে ফিরে গেছেন। আর সেলিম হোসেন ফিরেছেন ইইই বিভাগে। অনিয়ম করে ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগ আনা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে।

তারা দুজন উপাচার্য ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকাকালে রুয়েটে ১৩৫ জনের নিয়োগ হয়। সেখানে ভিসির আপন দুই ভাই, বোন, চাচাত ভাই, শ্যালক, শ্যালিকা, গৃহকর্মী ও তার স্বামীসহ আত্মীয়-স্বজন নিয়োগ পান। লিখিত পরীক্ষায় ফেল করলেও মৌখিকে অস্বাভাবিক নম্বর পেয়ে তারা চাকরি পান। ২০১৯ সালের মে মাসে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। 

পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিতে নম্বরপত্রে কাটাকাটি (টেম্পারিং) করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্তে এসব অনিয়ম উঠে আসে। পরে ইউজিসির সুপারিশের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম গত বছরের ২৮ মার্চ অনুসন্ধান শুরু করেন। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে গত জানুয়ারিতে মামলার অনুমোদন চান তিনি। কয়েক দিন আগে দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ থেকে মামলা দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, অনুসন্ধান শেষে রুয়েটের সাবেক ভিসি রফিকুল ইসলাম সেখ ও তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের মঞ্জুরি পাওয়া গেছে। আগামী ২৭ বা ২৮ তারিখ তিনি মামলা করবেন। তিনি বলেন, রুয়েটে তাদের আমলে ১৩৫ জনের নিয়োগে কমবেশি অনিয়ম হয়েছে। তবে তার মধ্যে ১৭ জনের নিয়োগ নিয়ে দুদক মামলা করবে। 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, যে ১৩৫ জনের নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ৩ জন শিক্ষকসহ ১১৮ জনের নিয়োগের বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধানে বাদ দেওয়া হয়। কারণ রুয়েটের বিধি অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগসহ কতিপয় নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি ফৌজদারি কার্যবিধিতে নেওয়া হয়নি। তবে এই ১৩৫ জনের মধ্যে ১৭ জনের নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। তাই মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রুয়েট থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই পরবর্তী চার বছরের জন্য ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম সেখ। এরপর বিভিন্ন সময়ে তিনি ১৩৫ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেন। ২০২১ সালের ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২তম সিন্ডিকেট সভায় এসব নিয়োগ অনুমোদন ও বৈধ করা হয়। এরমধ্যে ১৭ জনের নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসির কোনো বিধি-বিধান মানা হয়নি। নম্বরপত্র টেম্পারিং করে আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুয়েটের সাবেক ভিসি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ বলেন, দুদকের মামলার সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানেন না তিনি। আর নিয়োগে অনিয়মও হয়নি। তারপরও মামলা হলে আইনগতভাবে তা মোকাবিলা করবেন তিনি। 

সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সেলিম হোসেনের মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাই তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

কেয়া/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়