ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

৫২ বছরেও ছাত্রাবাস পায়নি ধামরাই সরকারি কলেজ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৭, ৩১ মার্চ ২০২৪  
৫২ বছরেও ছাত্রাবাস পায়নি ধামরাই সরকারি কলেজ

প্রতিষ্ঠার ৫২ বছরেও কোনো ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস পায়নি ঢাকার ধামরাই সরকারি কলেজ। ফলে দূর দূরান্ত থেকে আসা দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বাড়তি টাকা খরচ করে মেস ও বাসা বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।

কলেজ সূত্র জানায়, ১৯৭২ সালের ১ জুলাই ধামরাই থানা রোড এলাকায় ৬.৬ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ধামরাই সরকারি কলেজ। একাদশ, দ্বাদশ, ডিগ্রি পাস কোর্সসহ বর্তমানে ৮টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর বিষয় রয়েছে। কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০০ জন। এদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী। ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও আশুলিয়া, সাভার, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে শিক্ষার্থীরা কলেজটিতে পড়তে আসেন। আবাসনের জন্য এক সময় পুরাতন পরিত্যক্ত একটি ভবন ও কলেজ সংলগ্ন একটি টিনের ঘর ব্যবহার করা হতো। তবে, সেগুলোও আনুষ্ঠানিক কোনো ছাত্রাবাস ছিল না। এর বাইরে এতো বছরেও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কোনো আবাসন ব্যবস্থা পায়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বলছেন, অনেক দূর দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসেন। কলেজের আবাসিক কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মেস ও বাসা ভাড়া করে থাকেন। শিল্প এলাকা হওয়ায় ভাড়ার এসব আবাসন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ফলে বাড়তি অর্থ ব্যয় করে অনেকেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ধামরাইয়ের থানা রোড এলাকার একটি বাসার মেসে থাকেন ধামরাই সরকারি কলেজের চার শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদ হোসেন জানান, প্রতি মাসে তাদের চার জনের ৫ হাজার টাকা মেস ভাড়া দিতে হয়। গ্যাস ও রান্নার লোকসহ খাবারের জন্য ২০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। কলেজের ছাত্রাবাস থাকলে অনেক কম খরচ হতো তাদের।

সাধারণ ছাত্রদের এ আবাসন সঙ্কট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন ছাত্র সংগঠনের নেতারাও। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইদুল ইসলাম পিয়াস বলেন, আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাদের কথা চিন্তা করে আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি অবগত। তিনিও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। কলেজ প্রশাসন চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে।

ঢাকা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মনির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তি ও কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। ছাত্র ইউনিয়ন দীর্ঘ দিন ধরেই আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছে। আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আবাসন সঙ্কট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ধামরাই সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জিয়াউল হক বলেন, কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যও বিষয়টি নিয়ে আন্তরিক। আশা করছি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই একটি উদ্যোগ নেওয়া হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম আকন্দ বলেন, আমরা প্রকল্প পেয়েছিলাম। কিন্তু জমি সঙ্কটে আমরা হল করতে পারিনি। ধামরাইয়ে জমি পাওয়া কঠিন। ফলে সম্ভব হয়নি। আমরা নতুন বিভাগের জন্য আবেদন করেছি। নতুন একাডেমিক ভবন ও শিক্ষক প্রয়োজন। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি।

সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ