ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

টিকিট ছাড়া পার্কে ৫ শিশু, কান ধরিয়ে দাঁড় করে রাখলেন ইউএনও! 

শরীয়তপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ১৬ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ২৩:০৫, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শরীয়তপুর পার্কে টিকিট ছাড়া প্রবেশের দায়ে ইউএনওর নির্দেশে ৫ শিশুকে আটক করে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে-  এমন অভিযোগ উঠেছে। 

সোমবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পৌরসভার শিল্পকলা একাডেমির মাঠ এলাকায় জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রিত শরীয়তপুর পার্কে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। 

অভিযোগ উঠে, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিনের নির্দেশে দুইজন গ্রাম পুলিশ ও আনসার সদস্যদের প্রহরায় শিশুদের তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর পার্কটি ঈদের দিন চালু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পার্কের দেখভালের দায়িত্বে আছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন। সীমানা প্রাচীর দিয়ে পার্কটির চারপাশ আটকে একটি প্রবেশ দ্বার রাখা হয়েছে। পার্কের ভেতরে শিশুদের খেলার জন্য বসানো হয়েছে ১৫-১৬টি বিভিন্ন রাইড। এছাড়াও পার্কে প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। সোমবার সন্ধ্যায় পৌর এলাকার হাতিরকান্দি, তুলাসার ও স্বর্নঘোষ এলাকার ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সী কয়েকজন শিশু পার্কের আশেপাশে খেলাধুলা করছিল। এসময় তারা নিরাপত্তা প্রহরীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমানা প্রাচীর টপকে পার্কে প্রবেশ করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে গ্রাম পুলিশ ও আনসার সদস্যরা তাদের ৫ জনকে আটক করেন। পরে সেখানে উপস্থিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মাইনউদ্দিন ওই শিশুদের মধ্যে ৪ জনকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ উঠে। ওই ঘটনার সময় পার্কে উপস্থিত অনেক দর্শনার্থী মুঠোফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলেন ও ভিডিও ধারণ করেন। 

পার্কে দায়িত্বে থাকা প্রহরী জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারী বলেন, দেয়াল টপকে কিছু ছেলে পার্কে ঢুকে। পরে তাদের ধরে শাস্তি দেওয়ার জন্য পানিতে দাঁড় করে রাখা হয়। তবে কানে ধরার বিষয়টি আমি জানিনা।

ভুক্তভোগী এক শিশুর মা আকলিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার পোলার কাছে টাকা ছিলো না। টাকা না থাকায় ওরা কয়েকজন মিলে পার্কের দেয়ালে বসে দেখতেছিলো। একসময় ওরা পার্কে ঢুকে যায়। পরে আনসার আর ইউএনও স্যার ওদের দুই থেকে তিন ঘণ্টা কানে ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন। আনসাররা ওদের বন্দুক দেখাইয়া ভয় দেখাইছে। এই ঘটনার পর আমার পোলায় এখন ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে চাচ্ছে না।

ভুক্তভোগী শিশু শাহাদাৎ শিকদার বলে, আমার কাছে কোনো টাকা ছিলো না। আমার সাথে থাকা অনেকে ভেতরে ঢুকছে তাই আমিও ওদের সাথে ঢুকছি। পরে আনসাররা মিলে আমাকে সন্ধ্যা থেকে ৯ টা পর্যন্ত আটকে রাখছে। ইউএনও এসে আমাকে কান ধরে রাখতে বলছে আর পার্ক বন্ধ হওয়া পর্যন্ত আটকে রাখতে বলছে। 

ভুক্তভোগী আরেক শিশু বলে, আমরা বুঝতে পারলে ঢুকতাম না। আমাদের অনেকক্ষণ দাঁড় করাইয়া রাখায় পা ব্যাথা হয়ে গিয়েছিলো। ওনারা অনেক রাগারাগি করেছে। আমরা আর কখনো পার্কে যাবো না। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিন বলেন, কয়েকজন দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকলে গ্রাম পুলিশ ও দায়িত্বরত যারা ছিলেন তারা ওদেরকে ধরে আটকে রাখে। আমি গিয়ে কাউন্সিলিং করে ছেড়ে দেই। ওরা দুই একজন হয়তো ভয়ে কানে হাত দিয়েছিলো।

আকাশ/টিপু 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়