কুমিল্লার বিনোদন কেন্দ্রে এখনও ভিড়
রুবেল মজুমদার, কুমিল্লা || রাইজিংবিডি.কম
ঈদের টানা ছয় দিনের ছুটি শেষ। তবে এখনও কুমিল্লার বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে আছে। ঈদের ছুটিতে কুমিল্লার শালবন বিহারসহ বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় করেছে কুমিল্লা ও আশপাশের জেলার দর্শনার্থীরা।
কুমিল্লায় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ শালবন বৌদ্ধ বিহার ও নগরীর ধর্মসাগরপাড়। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে শালবন বিহার। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কুমিল্লা আসার জন্য রেল ও সড়কপথে যাতায়াতের সুব্যবস্থা থাকায় দর্শনার্থীরা এখানে সহজে আসতে পারেন। এখানে অষ্টম শতকের পুরাকীর্তি রয়েছে। এখানে রয়েছে ময়নামতি যাদুঘর। জাদুঘরের পাশে রয়েছে বনবিভাগের পিকনিক স্পট। শালবন বিহারের পাশে বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)।
বিভিন্ন উৎসবে সরগরম হয়ে ওঠে শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর। এ ঈদের ছুটিতে মঙ্গলবারও (১৬ এপ্রিল) শালবন বৌদ্ধ বিহারের পার্কিংয়ে শতাধিক প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন যানবাহন দেখা গেছে। বিহারে শিশুদের নিয়ে প্রবেশ করেছে অভিভাবকরা, সেখানে শিশুরা ছোটাছুটি করছে। কেউ মোবাইল ফোনে ছবি কিংবা সেলফি তুলছে।
লালমাই পাহাড় এবং মহানগরীর বেসরকারি পার্কেও ভিড় রয়েছে। তবে টিকেটের উচ্চ মূল্য হওয়ায় সব শ্রেণীর দর্শনার্থী সেখানে যেতে পারছে না। শহরের ধর্মসাগর পাড়ে আড্ডা দিতে এবং নৌকায় চড়তে মানুষ ভিড় করছে। নগর উদ্যানেও শিশুসহ অভিভাবকদের ভিড় দেখা গেছে।
কুমিল্লার সদর দক্ষিণে লালমাই পাহাড়ের শীর্ষচণ্ডি মন্দির, কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাগোয়া রাজেশপুর ফরেস্টবিট, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ওয়ার সিমেট্রি, জেলার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীরে নারী জাগরণের পথিকৃৎ নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়িতেও দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।
ফেনী থেকে শালবন বৌদ্ধ বিহারে বেড়াতে আসা এক দম্পতি জানান, পর্যটকদের জন্য প্রয়োজনীয় হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হলে পর্যটনে কুমিল্লা আরও বেশি সফলতা অর্জন করতে পারবে।
শালবন বৌদ্ধ বিহারে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা কলেজ শিকক্ষ শামীম সরকার বলেন, শালবন বিহারসহ অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো বেড়ানোর মতো দারুণ জায়গা। এগুলো সুরক্ষিত করা গেলে সরকারের রাজস্ব আয় আরও বাড়বে।
ম্যাজিক প্যারাডাইসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুদাব্বির হোসেন নাছির জানান, ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন পর্যটক ছিল চোখে পড়ার মতো। তারপর থেকে কিছুটা কমতে শুরু করে। তাদের এখানে দর্শনার্থীরা সুযোগ-সুবিধা বেশি পাওয়ায় আসেও বেশি। দাবদাহে তাদের ওয়াটার জোন দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর কুমিল্লা জোনের আঞ্চলিক পরিচালক একেএম সাইফুর রহমান বলেন, ঈদের দিন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো বন্ধ থাকে। কিন্তু এ বছর ভ্রমণ পিপাসুদের কথা চিন্তা করে শুধু শালবন বিহার খোলা রাখা হয়। ঈদের ছুটি শেষ হলেও গড়ে প্রতিদিন ১৫ হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছে।
/বকুল/
আরো পড়ুন