ঢাকা     সোমবার   ২০ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

৪৫০ টাকা কেজি দরে কোরবানির গরুর বুকিং 

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২২, ৮ মে ২০২৪   আপডেট: ১৮:২৩, ৮ মে ২০২৪
৪৫০ টাকা কেজি দরে কোরবানির গরুর বুকিং 

খুলনার একটি খামারে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রতিকেজি ৪৫০ টাকা দরে গরু বিক্রি হচ্ছে। আগামী জুন মাসের ১৭ তারিখে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

ফাইজার নামক এ খামারটি খুলনা নগরীর তেলিগাতী দক্ষিণ পাড়ায় অবস্থিত। খামার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাজারে মাংসের দামের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গরুর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেকে পছন্দের গরুর অগ্রিম বুকিং দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে তারা।  

খামার কর্তৃপক্ষ ৫০০ টাকা কেজি দরে গরু বিক্রির ঘোষণা দেয়। তবে ৫০ টাকা কমিয়ে বিক্রি করছে। খামারের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ৫০০ টাকা কেজি দরে গরু বিক্রি করলে ভুরি-চামড়াসহ উচ্ছিষ্ট অংশ বাদ দিলে মাংসের দাম পড়ে প্রতিকেজি ৮০০ টাকা। বর্তমানে বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকা। ৪৫০ কেজিতে গরু কিনলে মাংসের দাম পড়বে ৭০০ টাকা। যদিও কোরবানির উদ্দেশ্য মাংসের হিসাব নয়। ইতোমধ্যে ১০ জন ক্রেতা তাদের পছন্দের কোরবানির গরু কেনার জন্য বুকিং দিয়েছেন বলে জানান তিনি। 

এ পদ্ধতিতে ক্রেতাকে নগদ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তার পছন্দের কোরবানির গরু কেনার জন্য বুকিং দিতে হবে। বুকিং দেওয়া পশুর যাবতীয় দায়ভার খামারের মালিক বহন করবেন। বুকিং দিয়ে একজন ক্রেতাকে গরু ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে। কোরবানির ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত খামারে গরু রাখার নিশ্চয়তা রয়েছে। ক্রেতার ইচ্ছানুযায়ী যে কোনো দিন ডিজিটাল স্কেলে গরু ওজন দিয়ে ৪৫০ টাকা কেজি দরে দাম পরিশোধ করার পর গরু নিয়ে যেতে পারবে। 

ক্রেতাকে ওই গরুর জন্য অন্য কোনো খরচ বহন করতে হবে না। কোনো কারণে গরুর দুর্ঘটনা ঘটলে ক্রেতা তার বুকিংকৃত টাকা ফেরত পাবেন। 

খামারের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের পর হাট থেকে গরুর বাচ্চা কিনে এনে সেগুলোর পরিচর্যা করেন। গরুর খাওয়ানো ও পরিচর্যার জন্য তার খামারে ১৬ জন লোক রয়েছে। সম্পূর্ণ অর্গানিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করেন। বর্তমানে তার খামারে দেশীয় প্রজাতির ৯৩টি গরু রয়েছে। যা সর্বনিম্ন ৪০০ কেজি থেকে ১ হাজার কেজি ওজনের মধ্যে।

এদিকে, খুলনা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলায় এ বছর কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত আছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮টি। পাশাপাশি চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৩টি। চাহিদার তুলনায় জেলায় ২১ হাজার ৮৩৫টি পশু বেশি রয়েছে।

খামারিরা বলছেন, পশুর খাদ্য ও লালন-পালন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ বছর পশুর দাম কিছুটা বেশি হতে পারে। বাজারে এখন গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দিঘলিয়া উপজেলায় কামারগাতি এলাকার কোরবানিযোগ্য ৪টি গরু পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত খামারি অসিম বলেন, একটি বড় গুরুর জন্য প্রতিদিন ২০০ টাকার খাবার প্রয়োজন হয়। গরু মোটাতাজা করতে সয়াবিন খৈল, ভুট্রা, গমের ভুষি, ডালের গুড়া, ঘাসসহ অনেক ধরণের খাবার দিতে হয়। গো-খাদ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। খরচসহ কিছু লাভ পেলে তিনি গরুগুলো ছেড়ে দেবেন।

নগরীর খালিশপুর এলাকায় যুবক কামাল হোসেন কয়েক মাস আগে দুটি খাসি ছাগল কিনেছেন। তিনি খাসি ছাগল দুটি পরিচর্যা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তিন মাস আগে দুটি উন্নত জাতের ছাগল ২১ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। ইচ্ছা আছে, কোরবানি ঈদে বিক্রি করব। ইতোমধ্যে খাসি দুটির দাম উঠেছে ৩৫ হাজার টাকা।’

খুলনা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এখনও পর্যন্ত খুলনা জেলায় কোরবানির জন্য চাহিদার তুলনায় বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। 

/বকুল/ 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়